চট্টগ্রাম শহরের পাথরঘাটা নজুমিয়া লেইনে কিছু মাটির মটকার উপর তিনশত বছর দাঁড়িয়ে ছিল হাজার বর্গফুটের দ্বিতল ভবন। বিস্ময়কর হচ্ছে, মটকার উপর ২২ ইঞ্চি ইট সুকির আস্তর ছিল। ভবনের দেয়ালও ২২ ইঞ্চি পুরো। ঘরের মাঝখানে কুয়া। কুয়াতে এখনো বিশুদ্ধ পানির ধারা।
চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ী শরিয়ত উল্লাহ তিনশত বছর আগে মায়ানমারের রেঙ্গুন থেকে সরের জাহাজে এই মাটির মটকা এনে ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে এই ভবন তৈরি করেছেন বলে শরিয়ত উল্লাহ’র চতুর্থ প্রজন্ম মোহাম্মদ আবুল মনসুর জানান।
বৃহস্পতিবার (৮জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর প্রাক্তন ভিসি ও চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম ভবনটি পরিদর্শন করে বলেছেন, ওই সময় ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে এই মাটির মটকা পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে । তবে তিনশত বছর ধরে হাজার টন ওজনের ভবন মাটির মটকা কিভাবে ধারণ করেছে তা পরীক্ষা ও গবেষণা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র থেকে এই বিশেষ মটকাগুলো প্রত্নসম্পদ হিসাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংগঠনের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ ওই বাড়িটি পরিদর্শন করেন। ২০১৫ সালের প্রত্ন আইনে স্থাবর সম্পত্তি ১০০ বছর ও অস্থাবর সম্পত্তি ৭৫ বছরের পুরানো হলে তা প্রত্ন সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হবে। সেই মতে তিনশত বছরের পুরানো মটকাগুলো এখন প্রত্ন সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে তারা মত প্রকাশ করেন।
সংগঠনের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মটকাগুলো রক্ষা করে আগ্রাবাদ জাতি তাত্বিক যাদুঘরে সংরক্ষণ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করার কথা জানান।