চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নুরুল ইসলাম বাবুল ছিলেন বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গমালা। এই তরঙ্গমালা প্রতিরোধ করা যায়নি। তিনি সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতে কুন্ঠাবোধ করতেন না। আর এই সাহসই ওনাকে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ সেবায় অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিল।
শনিবার ( ১৩ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র এসব কথা বলেন।
সিটি মেয়র বলেন, এদেশে শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে, শিল্পপতি হবে, ধনকুবের হওয়া যাবে কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা আর জন্ম নেবে না। এদেশে একবারই যুদ্ধ হয়েছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধুর আহবানে দেশকে মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এই নুরুল ইসলাম। দেশ মাতৃকার টানে, দেশকে স্বাধীন করার জন্যে উনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। এজন্য তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, যারা সফলতা অর্জন করেছেন তারা আজীবন বেঁচে থাকবেন তাদের কর্মে। নুরুল ইসলাম শিল্প মালিক হয়ে বসে থাকেননি। সমাজ পরিবর্তন করতে যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছেন। ওনার যাপিত জীবনে দেশের জন্য, মানুষের জন্য যা করেছেন তা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, নুরুল ইসলাম নিজের চেষ্টায় জয়ী হয়েছেন। পেয়েছেন সাফল্য। তিনি যেমন অবদান রেখেছেন সমাজ পরিবর্তনে, তেমনি অসম্ভবকে করেছেন সম্ভব। তাঁর কর্মই তাকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখবে।
যুগান্তরের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে ও যমুনা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জামশেদ রেহমান চৌধুরীর সঞ্চলনায় স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, গাউছিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু, বিএফইউজে নির্বাহী সদস্য আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি সাহাব উদ্দিন হাসান বাবু, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি দেবাশীষ পাল দেবু, যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সভাপতি আবু সাদাত সায়েম ও সংগঠক মনির উদ্দিন প্রমুখ।
এর আগে সকাল ১১টায় পবিত্র খতমে কোরআনের আয়োজন করা হয়। এতে গাউছিয়া তৈয়বিয়া শাহ আমানত হেফজখানার শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। সভা শেষে মিলাদ, কিয়াম ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার কৃতি শিক্ষার্থী তাওফিক ইলাহী কাদেরী। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত এবং যমুনা গ্রুপের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করা হয়।
উল্লেখ্য, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল ২০২০ সালের ১৩ জুলাই ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।