ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, ‘তরুণদের পারিবারিক মূল্যবোধ আর বাঙালিয়ানা চর্চায় জোর দিতে হবে। পাশাপাশি তাদের মধ্যে অতিরিক্ত প্রতিযোগিতার চাপ তৈরি না করে, সময়ের সঙ্গে নিজেকে গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।’
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে আয়োজিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ভূমিমন্ত্রী। চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু’র মোহনা হলে আয়োজিত এই সংবর্ধনায় ১ হাজার ৫১১ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধিত করা হয়।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন কালচার ফলো করার একটা প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু সেখানে ফ্যামিলি ভ্যালু আমাদের মত না। আমাদের একটা ঐতিহ্য আছে। আমরা সবই জানবো, অনুসরণও করবো। কিন্তু আমাদের যে বাঙালিয়ানা, সেটাকে ধারণ করবো; চর্চা করবো। যারা জিপিএ-৫ পেয়েছেন তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। এর মানে এই নয় যে, যারা পায়নি তাদের দিয়ে কিছু হবে না। কারো সঙ্গে তুলনা করে নিজের অবস্থান নিয়ে মন খারাপ করা যাবে না। ওর এটা আছে, আমার কেন নেই—এভাবে ভাবা যাবে না। ভাবতে হবে আমার এমন হতে হবে, আমি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেজন্য নিজেকে গড়ে তুলবে।’
তিনি বলেন,‘ইদানি দেখছি সামান্য কিছু হলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা করার একটা প্রবণতা বাড়ছে। আমাদের এটা নিয়ে ভাবতে হবে, তরুণদের জীবনবোধ শিক্ষা দিতে হবে। তাই শিক্ষার্থীদের বলতে চাই, আপনারা ফ্যামিলি ভ্যালু বোঝার চেষ্টা করবেন। মা-বাবার কথা ভাববেন। একজন সন্তানকে জন্ম দেওয়া, বড় করা অনেক কষ্টের ব্যাপার। আপনারা যখন মা-বাবা হবেন, বুঝবেন। আর শুধু বইয়ে মুখ গুজে থাকলে চলবে না। পরিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।’
তরুণদের স্মার্ট বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার কথা মাথায় রেখে নিজেদের গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নিয়ে আমরা এখন কথা বলছি। এক সময়তো এই ভাবনাটা ছিল না। আমরা শুধু অতীত আর বর্তমান নিয়ে ভাবতাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়ে প্রথমবার আমাদের মাথায় এমন ভাবনা তৈরি করেছেন। সেটা সফলও হয়েছে, এখন তিনি বলছেন ২০৪১ সালে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হবো। সে বাংলাদেশের দায়িত্ব তোমাদের নিতে হবে। নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। ভিশন নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।’
মহানগর বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার সভাপতি সাজ্জাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও জাওয়াদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই সংবর্ধনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরী, সংগঠনের উপদেষ্টা মো. ইমরান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান জাহাঙ্গীর ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য আরিফুর রহমান, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল, প্রাক্তন ছাত্রনেতা একরাম চৌধুরী।
সংবর্ধিত কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মুমতাহিনা তাবাসসুম মালিহা।
অনুষ্ঠানে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান, ইউপি চেয়ারম্যান কাইয়ুম শাহ, অ্যাডভোকেট প্রকৃতি চৌধুরী ছোটন, আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জায়িদ বিন কাশেম উপস্থিত ছিলেন।