তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার এবারের ভারত সফরের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে ভারত বিনাশুল্কে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয়দেশে রপ্তানী করার সুযোগ করে দিয়েছে। এমনিতেও বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। বঙ্গবন্ধুকন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বে সে সম্পর্কে আরো নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। আর সেটির বড় প্রমান হলো ২০টি পন্য ছাড়া সকল পন্য ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে বিনাশুল্কে তৃতীয় বিশ্বে রপ্তানী করার সুযোগ দেওয়া। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস. রহমান হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা নতুন নয়। এর আগেও পদ্মা সেতু নির্মাণ, করোনা শুরুর পর ও করোনার টিকা নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সফল হয়নি। তিনি বলেন, এর সাথে জড়িত থাকে গণমাধ্যমের কেউ কেউ। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপি অনেক কথা বলে এখন চুপষে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
কল্যাণ ট্রাস্ট প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আগ্রহে সাংবাদিকদের কল্যাণে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিকভাবে সে তহবিলে ১০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এর বাইরেও আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কিছু টাকা দিয়ে শুরু করেছিলাম। অথচ সাংবাদিকদেরও দাবি ছিল একটি কল্যাণ তহবিল গঠন করার। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সংসদীয় আইনের ভিত্তিতে গঠিত একটি সংবিধিবদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর সরকার অনুদান দেয়। এখন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য একটি ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। আর একজন সাংবাদিক অসুস্থ হলে তাকে প্রয়োজন অনুসারে সহযোগীতা করা হচ্ছে। করোনা কালে উপমহাদেশের কোন দেশে এ ধরনের সহযোগীতা দেওয়া হয়নি অথচ বাংলাদেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে করোনাকালীন সহায়তা হিসেবে প্রায় ৪ হাজার সাংবাদিকের মাঝে করোনাকালীন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় প্রধানমন্ত্রী আরো ১০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। সে টাকা দিয়ে আমরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ও সহযোগীতা করেছি সে সহযোগীতা এখনো চলমান আছে। এসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে ওয়েজবোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি মিডিয়া হাউজে গ্রুপ-বীমা করার অনুরোধ করেন। এতে করে একজন সাংবাদিক অসুস্থ হলে বীমা কোম্পানী থেকে টাকা পাবে আবার মৃত্যুবরণ করলেও টাকা পাবে। গ্রুপ-বীমা করার জন্য খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। শুধু ইচ্ছাশক্তি থাকলে এটি করা সম্ভব হবে।
এসময় মন্ত্রী আরো বলেন, চেক বিতরণ করার সময় কে কোন দলের, কোন মতের, সেটা আমি কখনো বিবেচনা করিনি। কারন আমি মনে করি, আমি দলীয় সরকারের মন্ত্রী। কিন্তু যখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করছি তখন আমি চিন্তা করি রাষ্ট্রের সাহায্য যেন সবাই পায়। যারা প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাদেরকেও কল্যাণ ট্রাস্টের সহায়তা দিয়েছি।
পরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী চট্টগ্রামের ৩৬ জন সাংবাদিকের হাতে অনুদানের চেক বিতরণ করেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি শহিদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলামসহ প্রেস ও ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ার অসংখ্য সাংবাদিক এসময় উপস্থিত ছিলেন।