নির্বাচনে না আসলে বিএনপির অবস্থা ন্যাপের (ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি) মতো হবে; আর আওয়ামী লীগ ২০৪০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
সোমবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, নির্বাচনে না আসলে বিএনপির অবস্থা ন্যাপের মতো হবে। আজকে ন্যাপের যে অবস্থা তাদেরও সেই অবস্থা হবে। সংবিধান মেনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ছাড়া এদেশে কেউ আর কোনদিন ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আর কোনদিন ৭৫’ হবে না।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে তার ফাঁসি হতো। মৃত মানুষকে আসামি করা যায় না, এটা দেশের আইনে আছে। সে বেঁচে গেছে। ‘৭৫ সালে মোশতাক-জিয়া একটি নির্বাচিত সরকারকে ষড়যন্ত্র করে উৎখাত করে। জিয়াউর রহমান একজন কালপ্রিট। সে বঙ্গবন্ধুকে খুন করে তার হত্যার বিচার না হওয়ার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। ২২ হাজার ৫০০ যুদ্ধাপরাধী জেলে ছিলো তাদের ছেড়ে দিয়েছে। তারাও তাদের দল বিএনপি এখন বলে গণতন্ত্র, আইনের শাসনের কথা। তাদের মুখে এসব মানায় না।
‘যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ধূলিসাৎ করে, সাঈদীদের মন্ত্রী বানায়, ক্যান্টনমেন্টের সরকার কখনো গণতান্ত্রিক হতে পারে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দিতে গেলে আমেরিকা বাধ সাঁধে। বঙ্গবন্ধু কন্যা কারও কাছে মাথা নত করে নাই। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দিয়েছে।’
‘খালেদা জিয়া বলেছে জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু হবে। আর পদ্মা সেতুতে নাকি দুর্নীতি হয়েছে। অথচ তখনো টাকা আসেওনি। ড. ইউনূস হিলারীর কাছে গিয়ে বলেছে পদ্মা সেতুতে নাকি দুর্নীতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মচকাবে কিন্তু ভেঙে যাবে না। আজকে তারা বলে বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা হবে। বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না।’
তিনি বলেন, সবদেশেই জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশেও বেড়েছে। সেটি আমাদের কারণে বাড়েনি। আন্তর্জাতিক কারণে বেড়েছে। দাম বাড়লে মানুষের কষ্ট হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা চেষ্টা করছে সবকিছু যেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা জনগণকে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করছে। আমেরিকা, পাকিস্তান, সব দেশ থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে এখন ভালো। শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় থাকে আমরা সিঙ্গাপুর হব, মালয়েশিয়া হব।
‘বিএনপি যতো টেনে ক্ষমতা থেকে নামাবে বলে এ সরকারের মেয়াদ ততো বাড়তে থাকে। ২০০৯ সাল থেকে বলতেছে। সরকারের মেয়াদ তিন দফায় বেড়েছে। আমরা ২০৪০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকব ইনশাআল্লাহ। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হবে। আজকে পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করছে, কক্সবাজার মহাসড়ক করছে। কর্ণফুলী টানেল করছে। আমেরিকায় জিনিসপত্রের দাম ৭০ ভাগ বেড়েছে। আমাদের দেশে এতোটা বাড়েনি।’
মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় নগরের দি কিং অব চিটাগাং-এ সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। প্রধান বক্তা ছিলেন, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।
বিশেষ বক্তা ছিলেন, আওয়ামী যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মোহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক, সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।