ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী চট্টগ্রামবাসীর আবেগ আর পত্রিকার সম্পাদক এম এ মালেক চট্টগ্রামের রত্ন। তিনি যেই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত হয়েছেন, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটা ভালো পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর মতো কিছু ব্যক্তি এখনো আছেন বলে চট্টগ্রামবাসী ছায়া পাচ্ছে।
শনিবার (১৯ মার্চ) একুশে পদক পাওয়ায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।
বঙ্গবন্ধু হলে প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আরও বলেন, যে মন্ত্রণালয় নিয়ে আগে মানুষ নেগেটিভ চিন্তা করতেন এবং যে সকল অফিসারদের কাজের দক্ষতা ছিলো না এমন ব্যক্তিদের ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতো, সেই মন্ত্রণালয় এখন ডাইনামিক মন্ত্রণালয় হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। সততার একটা জায়গায় আনতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে দশটি ভালো মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভূমিমন্ত্রণালয় তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তবে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয়ের বাইরে আইন মন্ত্রণালয়ের আওতায় হওয়াতে সমন্বয়ের অভাবে এখনো মানুষের একটু ভোগান্তি হচ্ছে। যখন পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে, তখন এই সমস্যাও দূর হবে।
তিনি বলেন, জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে অনলাইনে খতিয়ান দেখা, খাজনা দেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়ানস্টপ সার্ভিস ব্যবস্থা চালু হয়েছে। দিনে দিনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের সমস্যা সমাধানে সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে তা সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সংবর্ধিত সাংবাদিক এম এ মালেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দৈনিক আজাদী বরাবরাই মানুষের মনের কথা বলে। আমার বাবা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক রাষ্ট্রদ্রোহীতার ভয়কে উপেক্ষা করে স্বাধীনতার প্রথম কবিতা ছাপিয়েছিলেন দৈনিক আজাদী পত্রিকায়। পৃথিবীতে এমন কোনো নজির নেই, যারা মায়ের ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। কিন্তু বাঙালি জাতি তা দেখিয়েছেন।
চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে থাকতে অনেক সুযোগ থাকার পরও ঢাকা থেকে জাতীয় দৈনিক হিসেবে প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের মানুষকেই প্রাধান্য দিয়ে দৈনিক আজাদীর পুরো পরিবার গঠন করা হয়েছে চট্টগ্রামের জনগণের সমন্বয়ে। এমন অনুষ্ঠান আয়োজনে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং তাঁর এই প্রাপ্তি চিরজীবনের পাথেয় হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেন।
প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, যোগ্য ব্যক্তি এম এ মালেক’কে উপযুক্ত পুরস্কার দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামবাসীকে সম্মানিত করেছেন। একইসঙ্গে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভূমি মন্ত্রণালয়ের জন্য নিরলসভাবে যেসকল কাজ করে যাচ্ছেন, এতে বাংলাদেশের মানুষ ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা থেকে মুক্ত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবনের নতুন বর্ধিত অংশ আখতারুজ্জামান চৌধুরী কর্ণার করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় প্রধান অতিথি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু চট্টগ্রামে প্রেস ক্লাবের প্রথম অনারারী জীবন সদস্য ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অঙ্গনকে ভালবাসতেন। ক্লাবে নিয়মিত ব্যাডমিন্টন খেলতেন।
যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা, সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) র সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সিইউজের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত, বিএফইউজে’র সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, তপন চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে এম এ মালেককে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন প্রধান অতিথি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং উত্তরীয় দেন প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস।
প্রধান অতিথি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন এম এ মালেক এবং উত্তরীয় দেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি স ম ইব্রাহীম, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, ক্রীড়া সম্পাদক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবু, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যকরী সদস্য শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, দেবদুলাল ভৌমিক, মনজুর কাদের মনজু। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, ক্লাবের আজীবন দাতা সদস্য ছাড়াও আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী এবং সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।