‘জাতির পিতার জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না’

শোক দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের খাবার বিতরণ

বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ জাকির হোসেন পিপিএম বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে তিনি এ দেশের মাটি ও মানুষকে গভীর ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলেই আমরা ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। তাঁর জন্ম না হলে এ দেশ কখনো স্বাধীন হতো না। যারা এ দেশের স্বাধীনতা কামনা করেনি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। এ ঘটনার এর মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এক ঘৃন্যতম ও কলঙ্কময় অধ্যায় যুক্ত হয়েছিল। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অসহায় মানুষের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরণ কর্মসূচীর চতুর্থ দিনের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত ১১ আগস্ট বুধবার থেকে ১৫ আগস্ট রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ১ হাজার অস্বচ্ছল ও অসহায় মানুষের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরণের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন রিভার ভিউ কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। ১৯৭৫ সালের নারকীয় হত্যাকান্ডের পর ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা ছিল তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম রশিদুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানার কোন শেষ নেই। তিনি অত্যন্ত দুরদর্শী নেতা ছিলেন। জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অইেশ শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা এ তিনটি শব্দ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যে ব্যক্তি আজীবন দেশের স্বাধীনতা ও এদেশের মানুষের জন্য ত্যাগ করে গেছেন তাঁেকই সপরিবারে নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারাই আজ ইতিহাস বিকৃত করছে। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে। জাতির পিতা হত্যাকারী ও ইতিহাস বিকৃতকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরী।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ও জেলা পুলিশের পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারিক রহমান। বক্তব্য রাখেন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এন ইসলাম, পটিয়া থানা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মহিউদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুস সালাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য মোঃ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, পটিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ রাশেদুল ইসলাম প্রমূখ। অনুষ্ঠানে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীন বিভিন্ন থানা কমান্ডের কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার, সহকারী কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।