এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে টোল আদায় শুরু হচ্ছে

নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে টোল আদায় কার্যক্রম শুরু হচ্ছে কাল। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় টোল আদায় কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

সিডিএ’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মোটর সাইকেল ও ট্রেইলার ব্যতীত মোট ১০ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এরমধ্যে প্রাইভেট কারকে ৮০ টাকা, মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ২০০ টাকা, বাস ২৮০ টাকা, চার চাকার ট্রাক ২০০ টাকা, ছয় চাকার ট্রাক ৩০০ টাকা, কভার্ড ভ্যানকে চলাচলের জন্য ৪৫০ টাকা টোল দিতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২৮ আগস্ট থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। গত ২৮ অক্টোবর সিডিএ’র নবগঠিত বোর্ডের প্রথম সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নতুন টোল হার নির্ধারণ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেই প্রস্তাব মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেওয়ার পর টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান নুরুল করিম বলেন, ‘আগামীকাল (শুক্রবার) সকাল ১০টায় উদ্বোধনের পর থেকে টোল আদায় কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।’

এদিকে সিডিএ’র বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে প্রথম নিহত কলেজ ছাত্র ওয়াসিম আকরামের নামে এর নামকরণের প্রস্তাব উঠেছে। টোল আদায় কার্যক্রম উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারেন। উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সিডিএ’র বোর্ড সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়।

চট্টগ্রাম মূল শহর থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা, শহরের যানজট কমিয়ে আনার পাশাপাশি যাত্রাপথের দূরত্ব কমাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। তবে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। প্রথমে ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়।

এরপর বিভিন্ন সময় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে তা ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। তবে সবশেষ সিডিএর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাজের সময় আরও একবছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিডিএ ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা। ২৪টি লুপ ও ১৪টি র‌্যাম্প নির্মাণের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর ৫টি র‌্যাম্প আপাতত নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।