আওয়ামীলীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : নোমান

আওয়ামীলীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, আগষ্ট বিপ্লবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে নির্বাসিত কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগের দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোন চক্রান্ত দেশের জনগণ এবং বিএনপি রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে হালিশহর নয়া বাজার বিশ্বরোড মোড়ে আয়োজিত র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম—১০ নির্বাচনী এলাকার বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে  এ সমাবেশ ও র‌্যালির আয়োজন করা হয়।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কোন দলের একক কৃতিত্ব নয়। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন অনেক বিলম্বিত হত। সেদিন শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামীলীগের নেতৃত্বশূন্যতা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হয়েছিল। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ক্ষান্ত হননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হচ্ছেন একজন শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। শহীদ জিয়া প্রতিষ্ঠিত বিএনপি হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার দল। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক হওয়া সত্বেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে কোন রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেননি। আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে এবং মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্বের মিথ্যা দাবী করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের মাধ্যমে দূনীতি ও লুটপাট করেছে।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, একটি মহল ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ কে নিয়ে নতুন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা রুখে দেব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে যদি আমরা এগিয়ে যাই তাহলে কোন অপশক্তি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।

বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, অন্তবতীর্ সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে তবে এই কার্যক্রম হতে হবে দ্রুত গতিতে। অতি দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না। কারণ নির্বাচিত সরকারের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা রয়েছে।

হালিশহর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন ডিপ্টির সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, অতীতে আওয়ামীলীগ মনোনীত বিনা ভোটের মেয়র যারা ছিলেন তারা সিটি কর্পোরেশনকে দূনীর্তি ও লুটপাঠের মাধ্যমে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছেন। সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন মার্কেট, দোকান ও বাণিজ্যিক স্পেসগুলো দূনীর্তি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ নেতাদের কাছে বিক্রী করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি নগর পিতা হিসেবে নয়, জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত গ্রীণ সিটি ও ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ.এম. নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ—সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর শামসুল আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, তরুণ বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাঈদ আল নোমান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, পাহাড়তলী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন জিয়া, হালিশহর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর আলম, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী প্রমুখ।

এছাড়া চট্টগ্রাম—১০ নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড সমূহের বিএনপি ও অংগ সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ এবং চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে বণার্ঢ্য বিজয় র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি হালিশহর নয়াবাজার মোড় থেকে শুরু হয়ে বড়পুল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।