বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তিতে ‘চলো দুর্জয় প্রাণের আনন্দে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে ছয় দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ বিজয় মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে নগরীর কাজির দেউড়ির সার্কিট হাউজ সংলগ্ন জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের সামনের মাঠে মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে বিজয় মেলার শুভ উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার। এ মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘আমরা শুধু কর্মের মধ্যে থাকবো না। আমাদের যে নিজস্ব কৃষ্টি রয়েছে, কালচার রয়েছে এই সংস্কৃতির বহিপ্রকাশ মেলাতেই হয়ে থাকে। ফলে এমন একটি স্থান আমরা খুঁজে বের করবো সকলের মতামত নিয়ে। কেননা আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আমাদের কাজ হচ্ছে আপনাদের চাওয়া পাওয়াকে রুপায়ন করা’।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে বৈষম্যমুক্ত একটা বাংলাদেশ গড়ার আমাদের প্রত্যয় রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের কৃষ্টি, আমাদের কালচার সবকিছুকে তুলে ধরতে হবে। সেই তুলে ধরার জন্য সত্যিই একটি মেলার মাঠের প্রয়োজন। যেখানে আমরা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সেই মাঠে বইমেলাসহ বিভিন্ন মেলার উদযাপনও যাতে করতে পারি।’
এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও বিজয়মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ফরিদা খানম বলেন, ‘চট্টগ্রাম কৃষ্টি-কালচারে ভরপুর একটা জেলা। এখানে প্রতিবছর বাণিজ্য মেলা হয়, বিজয় মেলা হয়। আমাদের সবোর্চ্চ চেষ্টা থাকবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যাতে একটা খেলার মাঠ ও একটা মেলার মাঠ পার্মানেন্ট (স্থায়ী) যাতে করতে পারি।’
এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘খেলার মাঠকে গুরুত্ব দিয়েছি বলেই মেলাটাকে আমরা এখানে (পরিত্যক্ত শিশুপার্কে) সরিয়ে এনেছি। আমরা ভবিষ্যতেও এই মাঠটাকে সংস্কারের আওতায় রাখবো এবং মাঠটাকে আরও বেশি খেলার উপযোগী করার জন্য পর্যায়ক্রমে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
মেলায় প্রতিদিনের আয়োজনে থাকবে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজয়ের কথামালা।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, বীর বাঙালির অহংকার’- এ স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রামে বিজয়ের মাসে বিজয় মেলার আয়োজন করত ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ’। সেই মেলা হতো এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটার স্টেডিয়ামে। তবে ২০২৩ সালে মাঠ বরাদ্দ না পাওয়াসহ কয়েকটি কারণে মেলা আয়োজন করা হয়নি। এ বছরও আউটার স্টেডিয়ামে বিজয় মেলা আয়োজনের কাজ প্রায় সেরে ফেলেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু তোপের মুখে পড়ে খেলার মাঠে মেলা না করার অবস্থান থেকে সরে আসতে হয় তাদের।