আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান আসামি চন্দন দাস।

আজ সোমবার দুপুর ৩টার দিকে আসামি চন্দনকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে বিচারকের খাসকামরায় নেওয়া হয়। সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার পর সন্ধ্যায় ৭টার দিকে আবারও তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গণি বলেন, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে আদালতে আসামি চন্দন দাস স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আসামি চন্দন দাস আলিফ হত্যা মামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল করিম জানান, আলিফ হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস আজ (সোমবার) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে আবারো কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ৫ ডিসেম্বর ভোরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি চন্দন দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন আদালতের নির্দেশে তাকে সাতদিনের জন্য হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার চন্দনকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিনঘণ্টা আটকে থাকার পর একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। আইনজীবী সমিতি এ হামলার জন্য ইসকন সদস্য ও সমর্থকদের দায়ী করে আসছে। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ইতোমধ্যে ৬ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪০ জন। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ১০ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।