আমদানিকারক ছাড় না করায় বন্দরে পড়ে থাকা খাবার অনুপযোগী হওয়া আমদানি করা ১০ কোটি টাকা মূল্যের ফল ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম। এসব ফলের মধ্যে কমলা এবং মাল্টাও অন্যান্য ফল রয়েছে। আগামী সপ্তাহে সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং পয়েন্টে ধ্বংস করা হবে । মামলা জটিলতার কারণে নিলামে বিক্রি করা যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘৪০০ মেট্রিক টনের মতো ফল রয়েছে। আগামী সপ্তাহে সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে এসব ফল ধ্বংস করা হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা কমলা-মাল্টা-ম্যান্ডারিন এবং ড্রাগন ফলের বর্তমান বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২০০ টাকার বেশি। সেই হিসাবে প্রতিটি কন্টেইনারে অন্তত ৬০ লাখ টাকার ফল ছিল যেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ধ্বংস করতে বাধ্য হচ্ছে। আমদানি সংক্রান্ত জটিলতায় যেমন ফল বোঝাই এসব কন্টেইনার আটকা পড়েছিল, তেমনি আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় আমদানিকারকদের পণ্য ছাড় না করার কৌশলও ছিল এখানে।
ফলমন্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আলম বলেন, ‘ডিউটি বেশি, ডলারের দাম বেশি এবং বাজারে চাহিদা কম। এসব হিসাব করে লোকসান হলে আমদানিকারক আর পণ্য খালাস করে না।’
এদিকে আমদানি করা ফল বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে থাকার পাশাপাশি নিলামে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে কাস্টমের দীর্ঘসূত্রিতাকেই দুষছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার অ্যাসোসিয়েশন। কাস্টম বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো নিলামের জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু কাস্টম থেকে আমাদের অবহিত করা হয় না। তাদের অসহযোগিতার জন্যই এসব ফল নষ্ট হচ্ছে এবং পরে তারা ডাম্পিং করছে।
ফলসহ পচনশীল পণ্যগুলোকে মান বজায় রাখতে রেফার কন্টেইনারে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়, যা চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে বর্তমানে ৯ হাজারে বেশি পণ্য বোঝাই কন্টেইনার পড়ে রয়েছে যেগুলো অনেক আগেই নিলামে বিক্রি করার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এরমধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা ফল বোঝাই বিশেষায়িত রেফার কন্টেইনার কয়েকশ। এ ধরনের ২১টি কন্টেইনার বোঝাই অন্তত ৪০০ মেট্রিক টন ফল ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিল কাস্টম হাউজ।