নগরীর বহদ্দারহাটে আবাসিক হোটেল থেকে বিবি কুলছুম লিপি নামে এক নারী হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। গ্রেপ্তার আসামির নাম- ফরহাদ হোসেনকে (২৪)। তার বাড়ি ভোলা জেলায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের খুলশী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চান্দগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) সবেদ আলী বলেন, ভিকটিমের বাবার করা মামলায় আমরা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করি। তারপর এরপর সিআইডির একটি বিশেষ টিমের সহায়তায় আমরা আসামী ফরহাদ হোসেনকে খুলশী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ফরহাদ।
সিআইডি চট্টগ্রামের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, চান্দগাঁও থানার বিবি কুলছুম হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেনকে বুধবার সন্ধ্যায় নগরের খুলশী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ও তার বাড়ি ভোলায়ও বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। বিবি কুলছুম টাকার বিনিময়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে গুলজার হোটেলে ফরহাদের সঙ্গে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, হোটেল কক্ষে বিবি কুলছুমের সঙ্গে ফরহাদের টাকার পরিমাণ নিয়ে বাগবিতণ্ডার হয়। সেখানে এক পর্যায়ে ফরহাদ বিবি কুলছুমকে গলা টিপে হত্যা করে। আজ (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে বিবি কুলছুম হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ফরহাদ হোসেন।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাটস্থ গুলজার হোটেলের একটি কক্ষের ওয়াশরুমের মেঝেতে গলায় ওড়না প্যাঁচানো এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ভুক্তভোগী বিবি কুলছুমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি নোয়াখালীর সদর থানার মুরাদপুর গ্রামে। এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা মো. আব্দুল ছাত্তার । পরে এই ঘটনার ছায়া তদন্ত করে অভিযুক্ত প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গত ১৯ অক্টোবর বহদ্দারহাটস্থ গুলজার হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে এক দিনের জন্য একটি কক্ষ ভাড়া নেন ফরহাদ ও লিপি। পরের দিন দুপুরে তারা চেক আউট না করায় হোটেল কর্মচারীরা রুমের সামনে গিয়ে দরজার হাতল বাইরের দিকে লাগানো দেখতে পান। এ সময় সন্দেহ হলে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে কর্মচারীরা লিপিকে ওয়াশ রুমের মেঝেতে গলায় ওড়না প্যাঁচানো এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মৃত দেখতে পান।