আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলায় ইসকন জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ

এ ঘটনায় ৫৮২ জনের নামে মামলা, আটক ৮২

নগরীর হাজারী গলিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় ৫৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ইসকন সমর্থকদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রাজনৈতিক মদত রয়েছে কি না তাও পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। এছাড়া ৮২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।  আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নগর পুলিশের এ কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন জানান, ইসকনকে নিয়ে দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ওসমান আলী নামে এক ব্যক্তিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে— এমন তথ্য ৯৯৯-এ পেয়ে আমাদের কোতোয়ালি থানা পুলিশ রেসপন্স করে। তারা সেখানে গেলে অবরুদ্ধ ওসমান নামে ওই ব্যক্তিকে উচ্ছৃঙ্খল জনতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাসদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। ছিনিয়ে নেওয়ায় বাধা দেওয়ায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল ও অ্যাসিড নিক্ষেপ করলে আমাদের ৯ জন সদস্য আহত হন। যার মধ্যে একজন অ্যাসিড দগ্ধ হয়েছেন।

হামলায় জড়িতরা ইসকন সমর্থক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও যাচাই-বাছাই করে আমরা ৮২ জনকে আটক দেখিয়েছি। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইসকন সমর্থক। কয়েকজন মুসলিম থাকতে পারে। এটিও যাচাই-বাছাই চলছে।’

ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোনো রাজনৈতিক মদত রয়েছে কি না সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। শান্ত নগরীকে যারা বিশৃঙ্খল করতে চায়, তাদের বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান। অস্থিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে যেন নাশকতা বা লুটতরাজ করতে না পারে সেই কার্যক্রম আমাদের আগেও ছিল এখনো রয়েছে।

হাজারি গলির ওষুধের কয়েকটি দোকান সিলগালা করায় নগরজুড়ে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা আমাদের নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে যেন সেখানে কোনো নাশকতা বা লুটতরাজ না হয় এজন্য কয়েকটি দোকান জেলা প্রশাসন সিলগালা করে সাময়িক বন্ধ করেছে। কিন্তু সব দোকান বন্ধ করা হয়নি।’

এ ঘটনার জেরে আগামীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শঙ্কা রয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি রইছ উদ্দিন বলেন, কোনো ছোট-খাটো ইস্যুকে কেন্দ্র করে যাতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। আমাদের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় নগরের কোতোয়ালি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলায় ঘটনাস্থল থেকে আটক ৮২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ দুপুরে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পুলিশের কাজে বাধাদান এবং হামলার অভিযোগ এনে অ্যাসিড দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেন।