চেরাগি মোড়ে আন্দোলনকারী-পুলিশের সংঘাতে মামলা, আসামি ৪০০

চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগি মোড়ে বৈষম্যবিরোধী’ আন্দোলনকারীদের একাংশের বিক্ষোভ সমাবেশে সংঘাতের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক নয়ন বড়ুয়া বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩শ থেকে ৪শ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেন। যে মামলায় এক কিশোরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

শিক্ষার্থী হত্যার বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়াসহ নয় দফা দাবিতে’ কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকায় ‘বৈষম্যবিরোধী’ আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। পরে সেখান থেকে পুলিশ ২০ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের আক্রমণে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত এক পুলিশ সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা, পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধাদানের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতে বিএনপি-জামায়াতের ১৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।‘ঘটনাস্থল থেকে আটক করা ২০ জনের মধ্যে ১৬ জনকে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি চারজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তারা শিবিরকর্মী বলে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি।

উল্লেখ্য, সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টা। নগরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ৯ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভে জড়ো হয়েছিলেন শতাধিক শিক্ষার্থী। সড়কে বসে প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। দায়িত্বপালনে ব্যস্ত ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরাও। এরই মধ্যে হঠাৎ ঘটে বিকট বিস্ফোরণ। চারদিকে ছোটাছুটি করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। কয়েক সেকেন্ডের মাথায় ঘটে আরেকটি বিস্ফোরণ। এরপরই লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ, ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। মূলত দুটি বিস্ফোরণই পুলিশের ছোঁড়া সাউন্ড গ্রেনেডের। তবে দ্বিতীয় সাউন্ড গ্রেনেডটির আঘাতে চোখে মারাত্মক জখম হন কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেন। এছাড়া আহত হন আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানমতে, পুলিশের ছোঁড়া সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর আহত হন ওই পুলিশ সদস্য।

তবে মামলার এজাহারে পুলিশ বলছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত মিশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।