ঈদুল আজহায় সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। তিনি বলেন, সুষ্পষ্ট কোনো থ্রেট নেই। কিন্তু আমাদের অতীতের খারাপ অভিজ্ঞতা আছে, সেগুলো আমাদের মাথায় আছে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশা করছি, তেমন কোনো দুর্যোগ ঘটবে না, যদি ঘটে তাহলে সেটা মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে।
রোববার (১৬ জুন) সকালে চট্টগ্রামে জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতের নিরাপত্তা প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সিএমপি কমিশনার বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত জমিয়াতুল ফালাহ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেটার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখলাম। এখানে যেহেতু লোকসমাগম বেশি হয়, আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এখানে তল্লাশি করা হয়েছে, ডগ স্কোয়াড কাজ করছে। পাশাপাশি নগরীতে প্রায় ৮০টি মসজিদ কিংবা ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সবার প্রতি অনুরোধ, জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু আনবেন না। যদি বৃষ্টি হয়, অবশ্যই ছাতা আনবেন। সেক্ষেত্রে আমাদের পুলিশের সঙ্গে যেন সহযোগিতামূলক আচরণ করা হয়, তাহলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ হবে।’
কোরবানির হাটেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনার জানান, চট্টগ্রাম নগরীতে ১৫টি জায়গায় কোরবানির পশুর হাট বসেছে। সেগুলোতে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হয়নি। হাটগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তারা খুব সহযোগিতা করছেন। ব্যাপারিরা যাতে গরু বিক্রির টাকা নিয়ে যেতে পারেন কিংবা ব্যাংকিং চ্যানেলে যাতে টাকাগুলো পৌঁছাতে পারেন, সে বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করছি।
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। সেজন্য নগরীতে অনেকটাই ফাঁকা ফাঁকা ভাব। প্রতিবছরই এরকম হয়। প্রতিবছর আমরা তিন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। ঈদের পূর্বদিন পর্যন্ত এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ঈদের দিন এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ঈদ পরবর্তী ফাঁকা শহরের জন্য এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমাদের গ্রহণ করতে হয়।
ইতোমধ্যে যারা বাড়ি চলে গেছেন, তাদের জন্য আমাদের পরামর্শ ছিল, তাদের মূল্যবান যে অস্থাবর সম্পদ আছে, সেগুলো নিরাপদ কোনোস্থানে যেন তারা রেখে যান। নিদেনপক্ষে একজন লোক ওই বাড়ি কিংবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের পাহারায় যেন নিয়োজিত থাকেন এবং প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। আশা করছি, নগরবাসী এ বিষয়ে সচেষ্ট আছেন।’
এক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যারা অবস্থাসম্পন্ন আছেন, প্রতিষ্ঠান হোক কিংবা ফ্ল্যাট-বাড়ি হোক, সেখানে যদি সিসি ক্যামেরা থাকে, যার মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানও পর্যবেক্ষণে রাখা সম্ভব, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা বিধান সহজ হয়। সিসি ক্যামেরা নগরীর অধিকাংশ স্থানে আছে। সার্বিকভাবে আমাদের ব্যবস্থা- সো ফার, সো গুড। এখন পর্যন্ত আমাদের নেওয়া সব ব্যবস্থা শতভাগ কার্যকর আছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া ও মাসুদ আহাম্মদ এবং কোতোয়ালী জোনের সহকারি কমিশনার অতনু চক্রবর্তী।