দলিল যার ভূমি তার বহুল আলোচিত এই আইনের বিধি আগামী দুই মাসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
তিনি বলেছেন, সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনায় ১ ব্যাক্তি, ১ খতিয়ান, ১ ম্যাপ প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা করছে। দলিল যার ভূমি তার বহুল আলোচিত এই আইনের বিধি কিছু সংশোধনীসহ আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আসার সঙ্গেসঙ্গে উক্ত আইনের বিধি মাঠ পর্যায়ে জারি করা হবে। সময় লাগবে ১ থেকে ২ মাস। সে সাথে উত্তরাধিকার জমির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রিকৃত বন্টননামা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।
বুধবার (১২ জুন ) সকালে ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষে নগরীর জিমনেশিয়াম হলে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট ভূমি সেবা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রেক্ষিত শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, জমির ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু না হলে উন্নয়ন কার্যক্রম টেকসই হবে না। ভূমি মানুষের অস্তিত্বের সাথে জড়িয়ে রয়েছে এবং প্রতিটি উন্নয়ন কাজে ভূমির সম্পর্ক আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনায় স্মার্ট ভূমিসেবা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ভূমি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ভূমিসেবা গ্রহীতাদের ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। একইসাথে নদী রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী জানান, ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধি আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। প্রয়োজনীয় ভেটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর আইন মন্ত্রণালয় থেকে তা ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা মাত্র ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালা জারি করা হবে। এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থায় আপডেট আনা হবে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: এমদাদুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শহীদুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সরোয়ার কামাল সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ী স্কুল শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পরে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণ চেক এবং আবেদনকারীদের নিকট খতিয়ানের নকল কপি হস্তান্তর করেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
অনুষ্ঠান শেষে ভূমিন্ত্রী ভূমিসেবা স্টল পরিদর্শন করেন। প্রসঙ্গত, গত ৮ জুন থেকে শুরু হওয়া ভূমিসেবা সপ্তাহ চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত।