হ্রদে পানি কমছে: কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধের শঙ্কা

হ্রদে পানির অভাবে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে অবস্থিত দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৫টি ইউনিট সচল থাকলেও হ্রদে পানি কম থাকায় বর্তমানে ১টি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বর্তমানে চলছে ভরা বর্ষা মৌসুম আষাঢ় মাস। কিন্তু আষাঢ়েও বৃষ্টির দেখা নেই এখনো। বৃষ্টি না থাকায় হ্রদের পানিও বাড়ছে না। এভাবে আর সপ্তাহ খানেক চললে পানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে (১৭জুন বৃহস্পতিবার) সকাল ৮টায় পানি ছিল ৭৪.৮২ ফুট এমএসএল (মীন সি লেভেল)। কিন্তু রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে পানি থাকার কথা ৮০ ফুট এমএসএল। নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে ৬ ফুট এমএসএল পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি জেনারেটর চালু থাকলে ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। মাত্র ১টি জেনারেটর সচল থাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে ২৫ মেগাওয়াট মাত্র। কাপ্তাই হ্রদে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে বলে স্বীকার করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের আরো বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিক ভাবে কমে যাওয়ার কারণে ৫টি জেনারেটরের মধ্যে ১টি জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আর ১টি জেনারেটর পুনর্বাসনের কাজ চলছে। বাকি ৩টি জেনারেটর সচল থাকলেও হ্রদে পানির স্তর কম থাকায় তা চালু করা যাচ্ছে না। এতে করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি সূত্র জানায়, বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল কাপ্তাই হ্রদ। বৃষ্টি হলে লেকে পানি বাড়বে। এছাড়া ভারত সীমান্তেও যদি বৃষ্টিপাত হয় সেই পানিও ছড়া, খাল পেরিয়ে কাপ্তাই হ্রদে এসে পড়ে। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তেও বৃষ্টিপাত নেই। তাই হ্রদের পানি বাড়ছে না। বৃষ্টি অথবা সীমান্ত থেকে হ্রদের পানির ধারা না আসলে কাপ্তাই হ্রদে (কর্ণফুলী হ্রদে) পানি বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, বর্তমানে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে তার পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে। পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। কাপ্তাই হ্রদের পানি যদি ৬৮ ফুট এমএসএল এর নীচে নেমে আসে তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। তবে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন যেকোন মুহুর্তে ভারী বর্ষণ শুরু হবে। টানা ৩ দিন ভারী বৃষ্টি হলে কাপ্তাই হ্রদে পানি সঙ্কট দূর হবে।

kaptai hydroelectric power plantKaptai Power Plantkarnafuli hydroelectric
Comments (১)
Add Comment