বিএনপি কি গাড়িঘোড়া ও মানুষের সম্পত্তি পোড়ানোর অধিকার চায়: প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সকালে একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, বিকেলে একবার করেন, আবার মাঝেমধ্যে সন্ধ্যাবেলায়ও করেন। তাদের নেতৃবৃন্দ সারাদেশে ঘুরে ঘুরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে।

তারা রাজনৈতিক স্বাধীনতা এর চেয়ে বেশি কী চান? তারা কি অবাধে গাড়ি-ঘোড়া ও মানুষের সম্পত্তি পোড়ানোর অধিকার চান? এমন প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, উনারা কি দিনের পর দিন হরতাল ডেকে মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখতে চান? যেটি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে উনারা করেছেন, যেগুলো মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধে শহিদ পুলিশ সুপার এম শামসুল হক চৌধুরীর আত্মত্যাগের বীরত্বগাঁথা অবলম্বনে নির্মিতব্য পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দামপাড়া’ এর শুভ মহরত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহামুদ এমপি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি, প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা দেখিয়ে তার দন্ড স্থগিত রেখে তাকে মুক্ত রেখেছেন এবং তিনি তার মতো করেই অর্থাৎ তার পরিবার এবং দলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। সরকারের অধীনে তিনি চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন না। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার যদি এখন স্বাস্থ্যের কোন হানি হয়, এটির জন্য দায়ী হবে বিএনপি এবং তার পরিবারের যারা চিকিৎসক এবং যারা তার স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন তারা।

এর আগে মন্ত্রী ‘দামপাড়া’ এর শুভ মহরত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মেট্রোপলিটন পুলিশ ছিল না। তখন চট্টগ্রামসহ সমগ্র চট্টগ্রাম জেলার এসপি ছিলেন এম শামসুল হক চৌধুরী। ছাব্বিশে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বাধীনতার ঘোষণা বার্তা দ্রুত চট্টগ্রামে পৌঁছে। ২৭শে মার্চ বৃহত্তর চট্টগ্রামের এসপি শামসুল হক অন্যান্য অফিসার ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে নিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এই চলচ্চিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের যে আত্মদান চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশের মানুষ তা জানতে পারবে।

এসময় মন্ত্রী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ জানান, কারণ তারা সাহস নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমি যেহেতু তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি তাই কেউ সিনেমা বানালে আমার ভালো লাগে, সিনেমা হল বানালেও আমার ভালো লাগে। তার মধ্যে যদি সেই সিনেমা হয় মুক্তিযুদ্ধের উপর তাহলে আরো ভালো হয় বলে মন্ত্রী অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, আপনার হয়তো অনেকেই জানেন, দামপাড়া একটি ঐতিহাসিক স্থান, ১৯৩০ সালে এখানেই ছিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার, মাস্টারদা সূর্যসেন তার বিপ্লবী বাহিনীকে নিয়ে এই চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে চট্টগ্রাম অঞ্চলকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ১১ দিন স্বাধীন রেখেছিলেন। সেই ইতিহাস কিন্তু সবাই জানে না।

মন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৩০ সালে এখান থেকেই বিপ্লবী নেতা সূর্যসেন তার বিপ্লবী বাহিনী দিয়ে অস্ত্র লুট করেছেন। দামপাড়ায় ১৯৩০ সালের ঘটনা আর ১৯৭১ সালের ঘটনার মধ্যে একটি বৈপরীত্য আছে। সেই বৈপরীত্যটা হচ্ছে, ১৯৩০ সালে এখান থেকে অস্ত্র লুণ্ঠন করতে হয়েছিল, অস্ত্র লুণ্ঠন করে বিপ্লবীরা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। আর ১৯৭১ সালে লুণ্ঠন করতে হয়নি। বরং অস্ত্রাগারের যিনি রক্ষক ছিলেন পুলিশ সুপার শামসুল হক তিনি অস্ত্রগুলো বিতরণ করে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে।

নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির। উপ-পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাকের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, ‘দামপাড়া’ ছবির নায়ক ফেরদৌস খান, নায়িকা হাসনে হাবীব ভাবনা, চলচ্চিত্রটির রচয়িতা আনন জামান, পরিচালক শুদ্ধমান চৈতন, মুক্তিযুদ্ধে নিহত সাবেক এসপি শামসুল হকের সহধর্মীনি মাহমুদা হক চৌধুরী প্রমূখ।

Comments (৪৮)
Add Comment