দেশের ইতিহাসে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহে নতুন দিগন্ত সূচনা, ১৭ পারসেন্ট সিসটেম লস সহ পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বছরে ২৩৬ কোটি টাকা

আজ ১৬ আগস্ট থেকে দেশের ইতিহাসে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহে নতুন দিগন্ত সূচনা হয়েছে। ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ঘণ্টায় ২৬০ থেকে ২৮০ মেট্রিক টন ডিজেল যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপোতে। বছরে যাবে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিকটন। বছরে এতে নৌ ও সড়কপথে ডিজেল পরিবহনে খরচ সাশ্রয় হবে সরকারের ২৩৬ কোটি টাকা। আলোচিত পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। উদ্বোধন করে সেনাবাহিনী কর্মকর্তা এবং জালানী উপদেষ্ঠা বলেছেন, পাইপলাইনে জালানী তেল পরিবহণে দেশে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদার ৪০ শতাংশ ঢাকায় । এতোদিন চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে প্রায় ১৫০টি ছোট-বড় তেলের ট্যাংকারে (জাহাজে) নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে ডিজেল পাঠাতে সময় লাগতো ৪৮ ঘণ্টার বেশি। এতে বছরে পরিবহণ খরচ, ১৭ পারসেন্ট সিসটেম লস এবং সময় অপচয় ছাড়াই মাত্র ৪ ঘণ্টায় জ্বালানি তেল নারায়ণগঞ্জের ডিপোতে পৌঁছুবে। এতে পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বছরে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা।
ফলে বছরে ৫০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহের লক্ষে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত, সিস্টেম লস কমানো, নৌপথে তেল পরিবহনের বিপুল খরচ সাশ্রয়, পরিবেশ সুরক্ষা, ঝুঁকিমুক্তভাবে দ্রুততম সময়ে তেল পরিবহনের লক্ষ্যে সরকার ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত আড়াইশ’ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০২০ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারি সহ বিভন্ন জটিলতায় তিন দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর প্রকল্পটির কাজ শেষ হয় চলতি বছরের মার্চে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা।
পাইপলাইনে তেল সরবরাহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। বিপিসি চেয়ারম্যান আমিনুল আহসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান, প্রজেক্ট ডিরেক্টর কর্ণেল সুলতান মাহমুদ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ।
আলোচিত পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। উদ্বোধনের পর পাইপলাইনেই কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে জ্বালানি তেল পাঠানো শুরু হয়েছে।