জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে একশত আসনে উন্নীত করা হবে, এ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । তবে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে এবং কোনো কোনো দল সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের পক্ষে। তিনি বলেন, অবিলম্বে আশু পদক্ষেপ হিসেবে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব যাতে বৃদ্ধি করা যায় সেজন্য কতগুলো বিষয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের নোট অভ্ ডিসেন্ট (ভিন্নমত) সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পেরেছি।
বুধবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২২তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব বিষয় জানান। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করতে আশু পদক্ষেপগুলো হলো, বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদের প্রয়োজনীয় সংশোধন, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে তিনশত আসনের জন্য ন্যুনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিবে ৷ এই পদ্ধতিতে ন্যুনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটা সাধারণ নির্বাচনে ন্যুনতম ৫ শতাংশ বর্ধিত হারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন অব্যাহত থাকবে। সংবিধানে সপ্তদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বৃদ্ধি করা হয়, হিসাব অনুযায়ী তা ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে ৷ তবে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থীতার লক্ষ্য ২০৪৩ সালের পূর্বেই যদি অর্জিত হয় তাহলে সপ্তদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রবর্তিত বিধান নির্ধারিত সময়ের আগেই বাতিল হয়ে যাবে।
এছাড়া আলী রীয়াজ জানান, ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্যে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি করতে সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ সংশোধনপূর্বক কিছু প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোকে আজ দেওয়া হয়েছে৷ এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছালে সংবিধান ও আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়নের বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হতে আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
#