জনগণের উপর করের বোঝা চাপাতে চাইনা উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমরা জনগণের সহায়ক হিসেবে কাজ করতে চাই। জনগণের উপর কোন করের বোঝা আমরা চাপিয়ে দিতে চাই না। আমার করদাতা ভাইয়েরা যাতে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় করগুলো দিতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করে দিব। তবে এর মধ্যে যাদেরগুলো নিষ্পত্তি হয়ে গেছে সেগুলো আর কিছু করার থাকবে না। যেহেতু এটা মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সেগুলো আমাদের কিছু করার নাই। কিন্তু নিষ্পত্তি যেগুলো এখনো হয়নি সেগুলো ইনশাআল্লাহ আমরা আপনাদের স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আপনাদের উপর করের বোঝা না চাপিয়ে আপনারা যাতে এই করগুলো সহজভাবে দিতে পারেন এই ব্যবস্থা করে দিব।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নগরীর ওয়াসা মোড়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নীচ তলায় চসিক উদ্যোগে আয়োজিত কর মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠিত কর মেলায় হোল্ডিং কর, ই-ট্রেড লাইসেন্সের শতভাগ সারচার্জ মওকুফ, আপিল শুনানি এবং বিভিন্ন তথ্য প্রদানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। জনগণ যাতে সহজে কর পরিশোধ করতে পারে, সে জন্য দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়।
চসিক মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি করে তোলার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্নভাবে আমরা কর আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই বন্দরকে আমরা চিঠি লিখেছি। আমাদের যে ন্যায্য কর তা যাতে আমাদের দেওয়া হয়। সড়কে বন্দরে পণ্য পরিবহণকারী ৭০-৮০ টনের যান চলাচল করায় রাস্তা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ, শহরের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার বিপরীতে তাদের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা সময়ের দাবি। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থা এখনো যারা কর দিচ্ছে না আমরা তাদেরকেও আহ্বান জানাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি অনেক কর বাকি আছে তাদেরকে আমরা আহবান জানাচ্ছি সময়মত কর প্রদান করে সহযোগিতা করুন। আমরা আপনাদেরকে ডিসকাউন্ট করার চেষ্টা করছি।
এসময় মেয়র বলেন, চট্টগ্রামকে গ্রীন ও ক্লীন সিটিতে রূপান্তর করতে নিয়মিত কর পরিশোধ করুন। জনগণকে করের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দিতে চাই না, বরং করদাতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই। জনগণের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যাতে সময়মত ট্যাক্সগুলো দিয়ে দেয়। কারণ হোল্ডিং ট্যাক্স যদি আমরা ঠিকমত পেয়ে থাকি তাহলে আমরা শহরকে সুন্দর করতে পারবো।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মেলায় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানিসহ রাজস্ব বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
মেলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব সার্কেল-১ ও রাজস্ব সার্কেল-৫-এর আওতাধীন এলাকাবাসীর করদাতারা ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, হোল্ডিং কর পরিশোধসহ বিভিন্ন সেবার সুবিধা গ্রহণ করেন।
সার্কেল-১ এর আওতাধীন ওয়ার্ডসমূহ ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী, ২নং জালালাবাদ, ৩নং পাঁচলাইশ, ৭নং পশ্চিম ষোলশহর, ৮নং শুলকবহর এবং রাজস্ব সার্কেল-৫ এর আওতাধীন ওয়ার্ডসমূহ হল ১৪নং লালখান বাজার, ১৫নং বাগমনিরাম, ২১নং জামালখান, ২২নং এনায়েত বাজার, ২৩নং উত্তর পাঠানটুলী, ২৮নং পাঠানটুলী। কর মেলায় নগরবাসী স্বতেছফূর্ত ভাবে উপস্থিত হয়। তাৎক্ষণিক কর পরিশোধ করেন ও ট্রেড লাইসেন্স সাথে সাথে প্রদান করা হয়। উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে আপিল শুনানীতে সম্মানিত করদাতাগণ আনন্দঘন পরিবেশে সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আপলি আপত্তি নিষ্পত্তি হয়।