চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়ন করা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও আউটার রিং রোড প্রকল্পে দুর্নীতি অনুসন্ধানে মাঠে নেমে প্রথমবারের মতো সিডিএ কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে দুদক সহকারী পরিচালক সাঈদ মো. এমরানে নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তিন ঘন্টার এ অভিযানে উপসহকারী পরিচালক মো. হামিদ রেজাসহ পাঁচ সদস্য অংশ নেন।
অভিযানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগে তিনটি পিলারে ফাটল, অতিরিক্ত র্যা ম্প নির্মাণ করা, রেলিংয়ের নাট-বল্টু ঠিকমতো না লাগানোসহ প্রকল্পের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক।
দুদক জানায়, আউটার রিং রোডের প্রকল্পের অভিযোগের মধ্যে ওই প্রকল্পে সিডিএর সাতজন কর্মকর্তা নিযুক্ত ছিলেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মূল বেতনের ১০ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে বেতনের আরও ৪০ শতাংশ অর্থ নিয়েছেন ওই কর্মকর্তারা। এ প্রকল্পেও আর্থিক অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তারা জানান, তবে আউটার রিং রোড প্রকল্পের যিনি প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন তিনি অনুপস্থিত থাকায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তার স্থলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রাজিব অভিযোগের বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপর দপ্তরের সচিব রবীন্দ্র চাকমার সঙ্গে কথা বললে তিনিও প্রকল্প কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার বিষয়টি অবগত আছেন বলে জানান।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিএ’র প্রকৌশলী রাজিব দাশ বলেন, ‘দুদুকের কিছু কর্মকর্তা আমাদের অফিসে এসেছিলেন। তারা আমাদের কিছু নথিপত্র যাছাই-বাছাই করেছেন। সিডিএর দুটি প্রকল্পের বিভিন্ন ফাইল ও নথিপত্র তারা আমাদের কাছে চেয়েছে। আমরা দিয়েছি। তারা সেগুলো দেখে চলে গেছেন।
উল্লেখ্য, চার হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৫৪ ফুট প্রশস্ত চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। তবে প্রকল্পের আওতায় ২৪টি লুপ ও ১৪টি র্যাম্প নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া হলে বাণিজ্যিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। অন্যদিকে ২ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর পতেঙ্গায় টানেলের প্রান্ত থেকে সাগরিকা পর্যন্ত সাগরতীর ধরে নির্মাণ করা হয় আউটার রিং রোড। চার লেনের ৮৪ ফুট চওড়া রোডটি ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ। ২০২০ সাল থেকে আউটার রিং রোড দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।