সীতাকুণ্ডে ডিসি পার্কে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা-ভাংচুর

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে মাসব্যাপি ফুল উৎসবের শেষের দিকে এসে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্কে হামলা  ও ভাঙচুর চালিয়েছেন একদল লরি চালক। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে চালকদের সঙ্গে পার্কের দায়িত্বে থাকা আনসার ও নিরাপত্তারক্ষীদের মারামারির জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।  এ সময় ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে সড়ক সচল করে।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চালকেরা লাঠি হাতে পার্কের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপর পার্কের ভেতরে বেশ কিছু দোকান ভাঙচুর করেন তাঁরা। এ সময় সড়কের পাশে লাগানো ছোট ছোট গাছও উপড়ে ফেলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাত আটটার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর একটি লরি পার্কটির পার্কিং এলাকায় থাকে। এ নিয়ে পার্কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে চালকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা লরি চালককে ধরে নিয়ে মারধর করেন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেখে দেন বলে জানা গেছে। ওই চালক বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পাশাপাশি অন্য চালকদেরও বিষয়টি জানান তিনি।

এদিকে পার্কের নিরাপত্তা প্রহরীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর পার্কের ভেতরে থাকা সীতাকুণ্ডের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন মূল ফটক এলাকায় এসে লরির চালকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। তাকে বুঝিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে চলে যেতে বলেন।

এর কিছুক্ষণ পর বেশ কয়েকজন চালক এসে পার্কের আনসার সদস্যসহ নিরাপত্তা প্রহরীদের মারধর শুরু করেন। তখন আবারও তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন। ততক্ষণে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন চালক এসে পার্ক এলাকায় ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় পার্কের ভেতরে থাকা দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্কে সৃষ্টি হয়। দর্শনার্থীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। পার্কের ভেতরে থাকা দোকানদারেরাও দোকান ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফৌজদারহাট পুলিশ গিয়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোর এক চালক বেপরোয়া গতিতে একটি লরি চালিয়ে পার্ক এলাকায় আসেন। এ সময় পার্ক এলাকায় দর্শনার্থীদের দুর্ঘটনায় পড়ার উপক্রম হয়। পার্কের নিরাপত্তা প্রহরী ও আনসার সদস্যরা তখন চালক থেকে তার কাগজপত্র নিয়ে মামলা দেবেন বলে হুমকি দেন। বিষয়টি শুনে তিনি  এসে দেখেন, বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চালককে তিনি বুঝিয়ে চলে যেতে বলেন; কিন্তু চালক গাড়ি সেখান থেকে সরাবেন না বলে জানিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর অনেক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে পার্কে হামলা চালান।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম জানান, সড়কে দর্শনার্থীদের একটি গাড়ি ও অন্য একটি গাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে চালকেরা পার্কে ভাঙচুর করেছেন৷ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।