চট্টগ্রামের রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (সিইপিজেড) দুইটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অন্তত ১৮ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে সিইপিজেডের জেএমএসএস ও মেরিনকো নামে দুটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, বেতন-ভাতা নিয়ে দফায় দফায় শ্রমিকদের বিক্ষোভে কারখানা দুইদিন বন্ধ রাখার পর শনিবার সকালে খুলে দেয়া হয়। এদিন সকাল থেকে মেরিনকো কারখানার শ্রমিকরা বেতন-ভাতা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সকালে তারা কারখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে জেএমএসএস কারখানায় ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগে শ্রমিকদের দু’পক্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সুলাইমান বলেন, ‘কাছাকাছি দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আহত কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। রে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি।’
তিনি বলেন, কারখানার শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী পুলিশ দুটি কারখানা ঘিরে রেখেছে। এই দুটি কারখানায় ৩ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ১৮ জন শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের কারো মাথা ফাটা, কেউ শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
(চমেক) হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তুহিন শুভ্র দাশ জানান, সিইপিজেড থেকে আসা এ পর্যন্ত ৬১ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে হাত-পা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে কারো অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।
এদিকে আহত শ্রমিকরা জানান, বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য দুই কারখানার শ্রমিকরা অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করছিল। এর মধ্যে জেএমএস কোম্পানি তাদের শ্রমিকদের দাবি মেনে নিলেও শনিবার সকাল থেকে তারা কাজে যোগ দেয়। এ সময় ম্যারিমো কোম্পানির একদল শ্রমিক জেএমএস কারখানায় ঢুকে ভাঙচুরসহ কর্মরত শ্রমিকদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়। ঘটনার পরপর আহতদের চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনা একতরফা ছিল বলে জানায় পুলিশ ও আহতরা। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশের একাধিক দল উপস্থিত রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। এদিকে কারখানা দুটি বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।