মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতাকারীরা আইয়ূব খানের বীজ

কোটাবিরোধী আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তিকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতাকারীরা আইয়ূব খানের বীজ মন্তব্য করে আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তিকারীদের  শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।

এ ছাড়া রাজাকারের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে প্রত্যেক ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় টানানো এবং ঘৃণাস্তম্ভ তৈরি করা। রাজাকার পরিবারের সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত, তাদের পরিবারের সব সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা এবং ভবিষ্যতে যাতে কোনো রাজাকারের প্রজন্ম সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না পায় আইন করে সেটার নিশ্চিত করার দাবিও জানান তারা।

বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে সংগঠণের নেতারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আজ এদেশের মানুষকে পাকিস্তানিদের টয়লেট পরিষ্কার করতে হতো। যারা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতা করছে, তারা আইয়ূব খানের বীজ। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তানরা পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।

সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কোটা নিয়ে যে কেউ আন্দোলন করতে পারে। আপত্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে যে বক্তব্যে দেওয়া হচ্ছে সেটা নিয়ে। যে ছাত্ররা এ বক্তব্য দিয়েছে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দেওয়া হোক। আপনারা যা ইচ্ছে তা-ই করবেন, মুক্তিযোদ্ধারা ঘরে বসে আঙ্গুল চুষবে সেটা তো হয় না। আমরা এখনও বেঁচে আছি।’

তিনি আরও বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্যে  এমন একটি শক্তি আছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এখনও মেনে নেয়নি। তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সমাবেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পক্ষে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল।

দাবিগুলো হলো- কোটা ব্যবস্থাকে ইস্যু করে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার নিয়ে কটূক্তিকারীদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সাংবাধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কতজন বীর মু্ক্তিযোদ্ধা বা তাদের পোষ্যরা চাকরি পেয়েছেন কোটার মাধ্যমে, অনতিবিলম্বে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নগর শাখার আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকুর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান সজিব ও জেলা শাখার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেলের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নগর শাখার ডেপুটি কমান্ডার শহিদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, জেলার ডেপুটি কমান্ডার আবদুর রাজ্জাক, শাহ আলম, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী প্রমুখ।