চিকিৎসক কোরবান আলী হত্যা মামলার দুই আসামি কারাগারে

কিশোর গ্যাংয়ের হাতে নিহত চিকিৎসক কোরবান আলী হত্যার মামলার দুই আসামি গোলাম রসুল নিশান ও আরিফুল্লাহ রাজুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৬ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালত এই আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজুর রহমান বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে বুধবার সকালে কোরবান আলী হত্যা মামলার দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিল। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এএইচএম জিয়া উদ্দিন বলেন,  গোলাম রসুল নিশান মামলার ৭ নম্বর আসামি। নিশানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তার নেতৃত্বে আসামিরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করত এবং তার নির্দেশনায় হামলা হয়। কিন্তু নিশান ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিল না। অপর আসামি রাজুর বিরুদ্ধে এফআইআর এ কোনো অভিযোগ ছিল না। তিনি বলেন, চিকিৎসক কোরবান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় আজ ( বুধবার) আসামি গোলাম রসুল নিশান ও আরিফুল্লাহ রাজু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিল। আদালত শুনানি শেষে তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মাহির সামি, আকিব, বগা সোহেল, ফয়জুল আকবর চৌধুরী আদর, প্রিন্স বাবু, আরিফুল্লাহ রাজু, অপূর্ব, সাগর, রিয়াদ, সংগ্রাম ও শাফায়েত।

গত ৫ এপ্রিল নগরের আকবরশাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাত থেকে দুই স্কুলছাত্রকে বাঁচাতে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন দন্ত চিকিৎসক ডা. কোরবানের ছেলে আলী রেজা রানা। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওইদিন সন্ধ্যায় গ্যাংয়ের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে কোরবান আলী ছেলেকে মারধর করতে যায়। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন চিকিৎসক কোরবান আলী। আহত কোরবান আলীকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে মেডিকেল সেন্টার নামে নগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনার পর আলী রেজা রানা বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আকবর শাহ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। শুরুতে নিশানের খোঁজ পায়নি পুলিশ। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয় নিশান।

চিকিৎসক কোরবানের ছেলে রেজা বলেন, হামলাকারীরা স্থানীয় গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী। যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটকের পর দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে রক্ষা করেছিল। এজন্য ওইদিন রাতেই গোলাম রসুল নিশান তাদের বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছিলেন। এর প্রতিশোধ নিতে দুই মাস পর আমার ওপর হামলা চালায় তারা।