লুডু খেলতে গিয়ে কথা কাটাকাটি। একপর্যায়ে রিকশা চালক আরিফকে থাপ্পড় মারেন আরেক সত্বীর্থ রিকশা চালক মো. আলমগীর (৬৫)। এ ঘটনায় প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠেন মো. আরিফ (২৮)। প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩০ মে গভীর রাতে তিনটার দিকে আলমগীরের রিকশায় চড়ে আলমগীরকে নিয়ে যান কাস্টম ব্রিজের কাছে। সুনসান নিরবতা দেখে সেখানেই পেছন থেকেই লোহার রেঞ্জ দিয়ে প্রথমে মাথায় আঘাত করেন আরিফ। রিকশা থেকে পড়ে যান আলমগীর । এরপর আরো বেশ কয়েকবার মাথা ও বুকে আগাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর আলমগীরের লাশ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে আলমগীরের রিকশাটি খুলশী থানার আমবাগান এলাকার এক ভাঙ্গারির দোকানে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
পরদিন ৩১ মে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে রিকশা চালক আলমগীরের লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। চমেক হাসপাতালে হাসপাতালে গিয়ে নিহত আলমগীরের ছেলে মো. মিরাজ বাবার লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামী রিকশা চালক আরিফকে শনাক্ত করে পুলিশ।
আসামী আরিফকে শনাক্ত করার পর ১ জুন শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে বন্দর থানার মধ্যম হালিশহরের ধুপপুল এলাকার নিজ বাসা থেকে অভিযুক্ত আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যার শিকার রিকশা চালক আলমগীরের ব্যবহৃত মোবাইলটি আরিফের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার আরিফ ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন থানার দেওয়ানপুর গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির মৃত আবদুল পাটোয়ারীর ছেলে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) কাজী মো. তারিক আজিজ জানান, মূলত লুডু খেলাকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনার সূত্রপাত। এই খেলা নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে তার ক্ষোভ আসামি আরিফ তার মনে পুষে রাখে এবং প্রতিশোধ প্রবণ হয়ে উঠে। পরবর্তীতে প্রতিশোধ নিতেই কৌশলে ভিকটিম আলমগীরকে ডেকে নিয়ে লোহার রেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।
তিনি বলেন, আসামীর দেয়া তথ্য মোতাবেক ভাঙ্গারির দোকান থেকে রিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে আসামির দেখানোমতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ১টি রেঞ্চ উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের ছেলের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।