সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রম। রোববার সকাল ১১ টায় সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন উদ্ধার কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রমে নতুন করে কোন মরদেহ পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, নতুন করে কোন দুর্ঘটনার সম্ভবনা নেই। তারপরও আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।
বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। রবিবার বিকেলে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান বলেন, তাদের প্রাথমিক ধারণা—অক্সিজেন প্ল্যান্টের এয়ার সেপারেশন কলাম থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এটি আন্ডার ইনভেস্টিগেশন, নট ফাইনাল।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান বলেন, ‘বিস্ফোরণস্থল সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের কর্মকর্তা এবং আশপাশের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেছি। স্পটে যাওয়ার পর আরও নতুন কিছু আমাদের সামনে আসে। ইতিমধ্যে আমরা বিশেষজ্ঞ টিম ও কমিটির সদস্যরা বসে পর্যালোচনা করেছি। আশা করছি নির্ধারিত ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিশেষজ্ঞ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞসহ কমিটির সদস্যরা মিলে আমরা একটি সামারি করি। মূলত কী কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সম্ভাব্য সব কারণ সামনে রেখে তদন্তকাজ শুরু করি। ভবিষ্যতে যাতে আর এ রকম ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পরামর্শসহ পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করছি আমরা।’
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়।
সকাল ৯টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিস্ফোরক অধিদফতরের পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, প্ল্যান্ট থেকে যে কলামের মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডারে ভরা হয়, সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে। অক্সিজেন ছাড়াও কার্বন ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেনের সিলিন্ডার দেখা গেছে। প্ল্যান্টের চারটি পয়েন্টে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ হয়নি। তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি বিকেল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে। কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে- পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধিকে।
সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামের প্ল্যান্টে শনিবার (০৪ মার্চ) বিকেলে হঠাৎ বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত হন। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৩৩ জনকে।