চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়োজনে ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ৩০ তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। প্রায় ৪ লক্ষ বর্গফুট জায়গা নিয়ে এ মেলায় ২০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৫৬টি প্রিমিয়ার স্টল, ৯৪টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১১টি ফুড স্টল, ৩টি আলাদা জোন নিয়ে ৪০০টি স্টলে ৩০০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। মেলায় নিজস্ব পণ্য নিয়ে থাকবে ভারত, থাইল্যান্ড ও ইরানী স্টলও।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানানো হয়। চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ও মেলা কমিটির উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে আয়োজিত এ মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে মেলার উদ্বোধন করবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ২০ লাখ দর্শক ক্রেতা সমাগম হয় মেলায়। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, জ্ঞানভিত্তিক ব্যবসায়ী গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে এবারের মেলায় বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ মেলায় অংশ নিয়ে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক, বিআরবি কেবল, হাতিলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বিশ্বজুড়ে রফতানি করছে। আমরা ১০ একর জায়গার জন্য চিঠি দিয়েছি। এটা পেলে মেলার স্থায়ী ভেনু হয়ে যাবে।
লিখিত বক্তব্যে মেলা কমিটির চেয়ারম্যান একেএম আকতার হোসেন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, সন্ধানী, র্যাড (রাইট একশন ফর ডিজএবিলিটি), চট্টগ্রাম, বধির ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবং ইলেক্ট্রিশিয়ান কল্যাণ সমিতিকে বিনামূল্যে একটি করে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী ও আগত দর্শনার্থীদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মেলা প্রাঙ্গনে চৌকশ পুলিশ বাহিনী ৩ (তিন) শিফটে বিভক্ত হয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণও বিশেষভাবে নিরাপত্তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণে সুদক্ষ প্রাইভেট সিকিউরিটির সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে গাড়িসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম মেলা চলাকালীন সময়ে সর্বদা মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থান করবে।
মেলার মাঠের উত্তর-পশ্চিম কর্ণারে পুরুষদের জন্য বিশাল জায়গাজুড়ে মসজিদ ও দক্ষিণ-পূর্ব কর্ণারে মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নতুন সংযোজন হিসেবে শিশুদের বিনোদনের জন্য মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মেলা শুধু বাণিজ্যের স্থান নয় এটা নগর জীবনে একে অন্যের সাথে মেলবন্ধনের একটি সুযোগ। তাই বসার সুবিধাসহ ফোয়ারা সমৃদ্ধ ১২,৩২০ বর্গফুট জুড়ে একটি ওপেন প্লাজা রাখা হয়েছে। মেলা চলাকালীন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার মেলা পরিদর্শন করবেন। এতে করে সেসব দেশে আমাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এই মেলা পরিদর্শন করবেন, যা দেশীয় শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণে সহায়ক হবে।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নারী ও পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত আলাদা-আলাদা টয়লেটের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে ১ম, ২য় ও ৩য় স্টল, প্যাভিলিয়ন ও দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী নির্বাচন করে বিশেষ পদক এবং সনদ দেওয়া করা হবে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এ মেলা। প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেলার চেয়ারম্যান ও চেম্বারের পরিচালক একেএম আকতার হোসেন, অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন প্রমুখ।