ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের মিরসরাই সমুদ্র উপকূলে ড্রেজার ডুবে আট শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এখনো তাদের সন্ধান মেলেনি।
মীরসরাই ইকোনমিক জোনের জন্য সাগর থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ওই ড্রেজার রাখা ছিল। খবর পেয়ে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ওই ড্রেজারের শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ড্রেজারে আমিসহ ৯ জন ছিলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে আসি। তবে বাকিরা সেখানেই ছিল।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়ায় ওই স্থানে রাখা ড্রেজার মেশিন ‘সৈকত-২’ ডুবে যায়। ওই সময় ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আলামিন, তারেক, ইমাম মোল্লা, আবুল বশর, মাহমুদ মোল্লাসহ আটজন নিখোঁজ হন। তাদের সবার বাড়ি পটুয়াখালীর জৈনকাঠি ও মোল্লাবাড়ি থানায় বলে জানা গেছে।
ড্রেজার ম্যানেজার রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাস্থলে আরও ছয়টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কতা সংকেত পেয়ে অন্য সব শ্রমিক নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও দুর্ঘটনায় পতিত ড্রেজারের আট শ্রমিক আসেনি। তিনি বলেন, উত্তোলনকারী শ্রমিকরা সাধারণত সবসময় ড্রেজারেই অবস্থান করে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমানোর ব্যবস্থা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজত একটি ড্রেজারসহ আট শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনেছি। সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। তারপরও তারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে গেলো না বুঝতে পারছি না।’
শ্রমিক নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, সাগরে ড্রেজারসহ আট শ্রমিক নিখোঁজের খবর পেয়ে একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সংশ্লিষ্ট কোস্টগার্ড কমান্ডারকে বিষয়টি মোবাইলফোনে জানালেও তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারি বলেন, ‘খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। তবে দুপুর পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।’