সীতাকুণ্ড জঙ্গল ছলিমপুরে প্রশাসন কর্তৃক বিদ্যুৎ ও পানির বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে বায়েজিদ লিংক রোড ও চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছে কয়েকশো মানুষ।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে জঙ্গল ছলিমপুর ও আলী নগরে উচ্ছেদ হওয়া লোকজন বিদ্যুৎ ও পানির দাবীতে প্রথমে বায়েজিদ লিংক রোড ও পরে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের ফকিরহাট এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে মহাসড়ক ও বন্দর থেকে পণ্যবাহী গাড়ীর দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। মহাসড়কে বন্ধ হয়ে যায় সব ধরণের গাড়ী চলাচল।
আন্দোলনকারীরা জানায়, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে সরকার জঙ্গল ছলিমপুর থেকে তাদের উচ্ছেদ করছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন কারার কারনে গত ২০ দিন ধরে তারা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে আছেন। বিদ্যুৎ পানির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আন্দোলন কারীরা।
খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ ও পরে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করছে।
অবরোধে অংশ নিতে আসা ছিন্নমূল বাসিন্দা রফিকুল আলম জানান, আমার পরিবার নিয়ে সেখানে এক যুগ ধরে বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি প্রশাসন আমাদেরকে কোনো পুনর্বাসন না করে আমাদের শত শত পরিবারকে উচ্ছেদ করে। বর্তমানে সেখানে বিদ্যুৎ-পানি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর প্রতিবাদে আমরা মহাসড়ক অবরোধ করি। এ জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্যথায় আবারো অবরোধের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অচল করে দেবার হুমকী দেন কেউ কেউ।
সীতাকুণ্ড সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম বলেন, তারা সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখলেও এখন
পর্যন্ত কোনো অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সীতাকুণ্ড সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম বলেন, আইনশৃঙ্খলা যাতে কোনো অবনতি না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
জানা যায়, সন্ত্রাসের জনপদখ্যাত জঙ্গল ছলিমপুরের সরকারি খাস পাহাড় দখল করে একটি চক্র তিন দশক ধরে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে সেখানে বিদ্যুৎ ও পানিসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। জঙ্গল ছলিমপুরের দুই হাজার একর সরকারী ভুমিকে ঘিরে নতুন শহর তৈরীর মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।যেখানে কেন্দ্রীয় কারাগার স্হানান্তর, স্পোর্টস ভিলেজ, হাসপাতাল, এমিউজমেন্ট পার্ক সহ বিভিন্ন সরকারী স্থাপনা তৈরীর পরিকল্পনা নেয়া হয়।
এ লক্ষ্যে এরিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারা জঙ্গল সলিমপুরের খাস জমিগুলো পরিদর্শন করেন। ২০ আগস্টের মধ্যে দখল করা খাস জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সর্বশেষ রোববার স্থানীয় সাংসদ দিদারুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ, পুলিশ সুপার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান ছলিমপুরে ওই এলাকায় পরিদর্শন করেন।