যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি পক্ষ তালেবান রাষ্ট্র বানাতে চায়, অন্যপক্ষ শ্রীলংকা। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন তাদের এ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না। যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন, ততদিন বাংলাদেশের তালেবান বা শ্রীলংকা হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
শনিবার (২৮ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ ফজলে শামস পরশ। বৃষ্টির কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে বেলা পৌনে ১২টায় উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়।
দক্ষিণ জেলার সম্মেলনে যুবলীগ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আজ পদ্মাসেতু তৈরি করা হয়েছে। ঋণ নিয়ে নয়, নিজ অর্থে এই সেতু করা হয়েছে। কিন্তু জনগণের ভালো লাগা ও গর্বের জায়গা পদ্মাসেতু নিয়ে বিএনপি-জামায়াত একাত্মতা পোষণ করতে পারছে না। কারণ, যুবলীগ যদি প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের গল্প নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যায়, তাহলে বিএনপি-জামায়াতের অস্তিত্ব থাকবে না। আর কোনো অজুহাত না পেয়ে এখন বিএনপি বলছে, সেতু নির্মাণে বেশি টাকা খরচ হয়েছে।’
যুবলীগকে মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে। এই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে হবে। মাঠে থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুবলীগকে কাজ করে যেতে হবে।’
দক্ষিণ চট্টগ্রামকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোয়ারের সময় দক্ষিণ চট্টগ্রামে মাত্র দুটি আসনে বিজয়ী হয়েছিল। যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে পরিণত করতে হবে। যুবলীগের সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনের প্রত্যাশা দেশপ্রেমিক কর্মীবান্ধব জনদরদী নেতৃত্ব নির্বাচন।’
‘গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন, যে নেতৃত্ব দেশপ্রেমিক সৎ ও মানবিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করবে। আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করতে হবে। উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে মেধাসম্পন্ন সুদৃঢ় নেতৃত্ব দরকার। কে হবে নেতা, তার চেয়ে বড় কথা, নেতৃত্ব কেমন হবে’ বলেন শেখ পরশ।
সরকার দুর্নীতিবাজদের ছাড় দিচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মী যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ছাড় দেওয়া হয়নি। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
সম্মেলনের প্রধান বক্তা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘যুবলীগের কমিটি নিয়ে কোনো বাণিজ্য হবে না। আমাদের হাত দিয়ে মাদকব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের নাম আসবে না। দুর্নীতিবাজ ও বিপথগামীরা যুবলীগে আসতে পারবে না। সৎ ও পরিচ্ছন্নদের দিয়ে যুবলীগের কমিটি হবে। প্রতিটি সংগঠনে অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করছে, আমাদের সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।’
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পার্থসারথী চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈম ও বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, সহ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
এর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে তিন দিনব্যাপী তিনটি সাংগঠনিক জেলা যুবলীগের সম্মেলনের সূচনা হয়েছে। রোববার হাটহাজারীর পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উত্তর জেলা এবং সোমবার নগরীর পাঁচলাইশে কিং অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হবে।