পরিবেশ সংরক্ষণে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী মোট ১ হাজার ২৬২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে বায়ু, শব্দ, জল ও কঠিনবর্জ্য দূষণ, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার, ঝুঁকিপূর্ণ সীসা ও ব্যাটারি-সাইক্লিং, জলাশয় ভরাট, অবৈধ ইটভাটা ও টায়ার পাইরোলাইসিস কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এই সময়কালে সর্বমোট ৩ হাজার ৬৩টি মামলার মাধ্যমে ২৫ কোটি ৭৫ লাখ ৯৫ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এতে ৪৮৪টি অবৈধ ইটভাটার চিমনি ভেঙে দিয়ে কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয় এবং আরো ২১৬টি ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়। ধ্বংস করা হয় ১৩৩টি ইটভাটার কাঁচা ইট।
একইসাথে, ১৬টি পলিথিন কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও কারখানাগুলো সিলগালা করা হয়। মোট ৯৮টি দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বা গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া ২ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান এবং ৬টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ ট্রাক সীসা ও ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনবিরোধী অভিযানে ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৯৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৯২৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং জব্দ করা হয়েছে ২৫১ দশমিক ৫৪ কেজি পলিথিন। ১৬টি পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সিলগালা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় কালো ধোঁয়ার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪টি মামলায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং কয়েকজন চালককে সতর্ক করা হয়।
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী ঢাকাসহ যশোর, রাজবাড়ী ও খুলনায় মোট ৫টি মোবাইল কোর্টে ১৯টি মামলার মাধ্যমে ২৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় এবং ২৭টি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয়।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২২ অনুযায়ী ময়মনসিংহ জেলায় ১টি মোবাইল কোর্ট ১টি মামলায় ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে।
একই দিনে নারায়ণগঞ্জে পলিথিনবিরোধী অভিযানে ২টি মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৯ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। অভিযানে সুপারশপ ও দোকানমালিকসহ জনগণকে সতর্কবার্তাও প্রদান করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।