যারা ভোট চান না, তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী —আমীর খসরু

চট্টগ্রামে উত্তর জেলা শিক্ষক সমিতির ত্রি বার্ষিক সন্মেলন 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যেখানে যতটুকুতে ঐক্যমত্য হবে তার বাইরে সময় নষ্ট না করে, লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে ড. ইউনূসের যে মিটিং হয়েছে, সেই মিটিং অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। এর বাইরে কিছু করতে চাইলে হবে বিপদ, আর এতে জনগনও মানবে না । সে সাথে যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে কেউ যদি সরে দাঁড়াতে চায়, তাদের মেসেজ দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, বাংলাদেশের মানুষ তার দেশের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। আর আপনারা যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি। আপনারা যারা ভোট চান না, নির্বাচন করবেন না, তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী ?
তিনি শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর লেডিস ক্লাবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার ত্রি বার্ষিক সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শিক্ষক সমিতির আহবায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টিপুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ মোবারক আলী এবং খন্দকিয়া চিকনদন্ডী স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহিদা আক্তারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সন্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম ভূইয়া। সন্মেলনের উদ্বোধন করেন শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঐক্যজোটের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি এম এ ছফা চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঐক্যজোটের কক্সবাজার শাখার সভাপতি হোসাইনুল ইসলাম মাতব্বর।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ চায়, একটি সহনশীল বাংলাদেশ চায়, পরস্পর সম্মানবোধের জায়গায় যেতে চায়, একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক, রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। সুতরাং একটাই পথ, দ্বিতীয় আর কোনো পথ নেই, দেশের মালিকের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার, এর কোনো ব্যতিক্রম নেই।
আমীর খসরু বলেন, একজন শিক্ষক সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গ্রামের বা শহরের মানুষ তাকে চেনে, সম্মান করে। শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক মা বাবার পরেই শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু সেই মর্যাদা আজ সমাজে অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যদি সত্যিই শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চাই, তবে প্রথমেই শিক্ষকের সামাজিক অবস্থান ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশে বর্তমানে শিক্ষকরা আর্থিকভাবে অবহেলিত। রাষ্ট্রের অন্য কর্মচারীরা নানা রকম সুযোগ সুবিধা পেলেও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয় না। নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও আমি মনে করি, আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ঐক্যবদ্ধভাবে সেই নির্বাচনকে সফল করার জন্য, একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমাদের সকলকে মিলে কাজ করতে হবে। আসুন, সবাই মিলে আমরা আগামীদিনের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিই।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া বলেন, প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সরকারি স্কুল ছাড়া আর কোন স্কুলের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষা দিতে পাররে না বলে কয়েকদিন আগে সরকার যে সার্কুলার জারি করেছে তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যাবেনা। কারণ দেশে বোর্ড থেকে অনুমোদন দেওয়া অনেক প্রাইমারি ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শাখা আছে। সুতরাং আগে যেহেতু সরকারি বেসরকারি স্কুল থেকে বৃত্তি পরীক্ষা দিয়েছে, এখন কোন সুযোগ নাই বেসরকারিদের বাদ দিয়ে শুধু সরকারি স্কুলের পরীক্ষা নেওয়ার। আমরা এই বিষয়ে উপদেষ্টা ও সচিবের সাথে কথা বলবো, যদি তারা কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা আদালতে যাবো।
এতে বক্তব্য রাখেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক কুতুবউদ্দিন বাহার, শিক্ষক নেতা মো. হাবিব উল্লাহ, সিটি করপোরেশন কলেজ সমিতির আহবায়ক আবদুল হক, চট্টগ্রাম জেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুরুল আলম রাজু, সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, শিক্ষক সমিতি সন্দ্বীপ উপজেলার সদস্য সচিব ফজলুল করিম সাঈদ, সীতাকুণ্ডের সভাপতি আবু জাফর মো. সাদেক, মিরসরাইর আহবায়ক রেজাউল করিম, ফঠিকচড়ির সদস্য সচিব মো. আলমগীর, হাটহাজারীর আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন, রাউজানের আহবায়ক মো. জামাল শাহ, রাঙ্গুনিয়ার সভাপতি মো. আইয়ুব অন্যরা।