চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ব্যক্তি স্বার্থে কিছু বুদ্ধিজীবীরা ঢাকার উন্নয়নের বিরোধীতা করেছিল, আজ ঢাকার কতিপয় বুদ্ধিজীবী ব্যক্তি স্বার্থে চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করছেন । অতীতে কলকাতা কেন্দ্রীক বুদ্ধিজীবিরা সংকীর্ণ ব্যক্তি স্বার্থে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় সহ নানা উন্নয়নের বিরোধিতা করেছিলো, আজ রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রীক কিছু আমলা ও বুদ্ধিজীবী সংকীর্ণ ব্যক্তি স্বার্থে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্ট ব্যাঞ্চ প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ দিনের ন্যায্য দাবীর বিরোধিতা করে আসছেন । এটা জাতীয় স্বার্থের ও উন্নয়নের সম্পূর্ণ পরিপন্থী ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্যে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা হাইকোর্ট আজ প্রায় ২০ কোটি মানুষের সার্ভিস দিতে অক্ষম ও ন্যুজ হয়ে পড়েছে । প্রধান সমূদ্র বন্দর চট্টগ্রাম ও দেশের ৮০% ব্যবসা বাণিজ্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রীক হওয়া সত্বেও বিচারপ্রার্থীদের আইনী ব্যবস্থা নিতে রাজধানী ঢাকায় দৌড়াতে হয় । একদিকে রাজধানী ঢাকা যানজট ও পৃথিবীর অন্যতম দূষিত শহরে পরিনত হয়েছে, অপর দিকে মামলার জটে স্থবির হয়ে পড়েছে বিচার ব্যবস্থা। ফলে বিচারপ্রাথীদের সময় ও অর্থ ব্যায় বহুগুন বেড়ে গেছে। বিলম্বিত বিচার ব্যবস্থা বিচারহীনতার নামান্তর । চট্টল বিদ্বেষী স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে সমূদ্র ও কোম্পানী অধিক্ষেত্র সহ চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিচারপ্রার্থী নাগরিক ও আইনবিদরা ।
সম্প্রতি সরকারের আইন ও বিচার সংস্কার কমিশনের উদ্যোগে চট্টগ্রামে সুপ্রিমকোর্টের স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও বাস্তবসম্মত উদ্যোগ। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য মণ্ডিত ব্যাবসায়ী সংগঠন সমূহ ও বার এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ, বিচারপ্রার্থী নাগরিক ও সকল ব্যবসায়ি সংগঠনের পক্ষ থেকে উক্ত সুপারিশকে স্বাগত জানিয়ে তাঁরা বলেন, ‘আমরা অতীতে দেখেছি, ছোট-বড় যে কোনো মামলার জন্যে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে রাজধানী কেন্দ্রীক হাইকোর্টে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে এবং হচ্ছে , এতে বিচার প্রার্থীদেরকে আর্থিক ও নানাবিধ দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। হাইকোর্টের মামলার জট ও ঢাকা শহরের দূর্বিষহ জানজট বিচারপ্রার্থী জনগনের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে । বিশেষ করে কোম্পানি মেটার ও সমূদ্র অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমার জন্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় দৌড়াতে হয় । ভূক্তভোগী বিচারপ্রার্থিদের দুর্ভোগ দুর্দশা লাগবে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার জন্য সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সকল ব্যবসায়ীদের পক্ষে জোর দাবী জানানো হয় ।
তাঁরা বলেন,- ‘প্রধান সমূদ্র বন্দর ও ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে সবার আগে চট্টগ্রাম হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ হওয়া হকদার।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ” দেশের প্রধান সমূদ্র বন্দর, বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত দেশের ২য় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম সহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তে” সরকার এবং রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্যমতকে স্বাগত জানিয়ে ষ্টেকহোল্ডারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তাগণ উপরোক্ত মন্তব্য করেন ।
চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন এর বিষয়ে সভাপতিত্ব করেন- বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর সদস্য এবং হাইকোর্ট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট এএসএম বদরুল আনোয়ার। এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এএম মাহবুব চৌধুরী, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স চট্টগ্রাম বিভাগ এর সভাপতি – প্রকৌশলী সেলিম মো: জানে আলম, খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহকারী নির্বাচন কমিশনার ম. বখতিয়ার, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব – অভীক ওসমান, এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম এর সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এর মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, হাইকোর্ট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম সমন্বয়ক- এডভোকেট বদরুল হুদা মামুন, সদস্য এডভোকেট মোঃ বদরুল রিয়াজ, বিজিএমইএ এর পরিচালক- এম সাইফ উল্লাহ মানসুর, সাংবাদিক নেতা- জাহিদুল করিম কচি, রিহ্যাব এর নেতা- আবদুল গাফফার মিয়াজি, চট্টগ্রাম সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার এর শেয়ার হোল্ডার- মো: আবদুল বাতেন, ইনভেস্টর ফোরাম চট্টগ্রাম এর যুগ্ম আহবায়ক এম এ কাদের, সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ আবুল কাশেম, বিজনেস বাংলাদেশ এর ব্যুরো প্রধান – জাহাঙ্গীর আলম ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক এডভোকেট কাশেম কামাল। এতে ইনভেস্টার এসোসিয়েশন, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।