লোহাগাড়ায় পুলিশ সদস্যের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার ঘটনার প্রধান আসামী কবির আহামদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাতে লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়ার গহীন পাহাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি দা, ১টি ওয়ান শুটার গান, ৩ রাউন্ড গুলির খোসা, ৩ রাউন্ড তাজা গুলি, ২ টি হাসুয়া, ১টি ছুরি, ১৮০ পিস ইয়াবা, ২ টি মোবাইল ও ২টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত দু’জন হলেন, লোহাগাড়ার মৃত আলী হোসেন ছেলে মো. কবির আহমদ ও একই এলাকার মৃত মোস্তাক আহাম্মদের ছেলে মো. কাফিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের কব্জি কেটে নেওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার মূল আসামি কবিরকে র্যাবের অভিযানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় কবিরের ছোরা গুলিতে র্যাবের এক সদস্য আহত হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামে র্যাব-৭ আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন, র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। শুক্রবার সকালে চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, ঘটনার পর র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৭ অভিযান শুরু করে। কনস্টেবল জনির হাতের কব্জি কেটে নেওয়ার পর থেকে সহযোগী কফিলকে নিয়ে বান্দরবানের দক্ষিণ হাংগর এলাকার একটি দুর্গম পাহাড়ে আত্মগোপন করে কবির আহমদ। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কবির তার সহযোগীসহ দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করে পুনরায় লোহাগাড়ার বড় হাতিয়ার গহীন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়। গতরাতে লোহাগাড়ার বড় হাতিয়ার গহীন পাহাড়ী এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান টের পেয়ে নিজের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি বর্ষণ করে কবির আহমদ। এতে আহত হয় র্যাবের এক সদস্য। এর পর র্যাবও পাল্টা গুলি বর্ষণ করলে আহত অবস্থায় কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ানশুটার গানসহ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার হয় তার সহযোগী কপিল উদ্দিনও। তারা উভয়ই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত ৬টি মামলা রয়েছে বলে র্যাব জানায়।
এর আগে, গত ১৬ মে সকালে লোহাগাড়া থানার এসআই ভক্ত দত্তের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম পরোয়ানাভুক্ত আসামি কবির আহমদকে গ্রেপ্তার করতে পদুয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আধারমানিক লালারখিল এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির আহমদের বাহিনী ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। তাদের ধারালো দায়ের কোপে পুলিশ কনস্টেবল জনির বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একই ঘটনায় আরও এক কনস্টেবল আহত হন। ঘটনার পর পরই পালিয়ে যান আসামি কবির আহম্মদ।
এ ঘটনায় রাতেই মামলা করে পুলিশ। মামলায় পলাতক আসামি কবির আহমদ, তার স্ত্রী ও মাকে আসামি করা হয়। পরে রাতে অভিযান চালিয়ে বান্দরবানের লামা থেকে আসামি কবিরের স্ত্রী রানু বেগমকে (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।