সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে ভিন্ন জীবনধারা গড়ে তুলতে হবে : ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানব সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে হলে গ্রহণ করতে হবে ভিন্ন জীবনধারা। গড়ে তুলতে হবে ভিন্ন সংস্কৃতি। সেটা হতে পারে তার দীর্ঘদিনের লালিত ‘থ্রি জিরো’ বা ‘তিন শূন্য’ ধারণা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও  ওষুধ কোম্পানিগুলোর পুনর্নকশার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনের পার্শ্ব ইভেন্টে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বক্তব্যকালে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি তরুণ এই তিন শূন্যের নীতি নিয়ে বেড়ে উঠবে- শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ, সম্পদের শূন্য পুঞ্জিভূতকরণ ও শূন্য বেকারত্ব। সেটা সম্ভব হবে কেবল সামাজিক ব্যবসা গড়ে তোলার মাধ্যমে। প্রতিটি মানুষ এই তিন শূন্যের নীতি নিয়ে বেড়ে উঠবে। সেই পথ ধরেই নতুন সভ্যতা গড়ে উঠবে।

সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শূন্য বর্জ্যের নীতি মানুষের ভোগে লাগাম দেবে; যা একান্ত জরুরি, কেবল তাই মানুষ ব্যবহার করবে। তাতে কোনো বর্জ্য অবশিষ্ট থাকবে না। এটা সেই জীবনধারা, যেখানে কার্বন নিঃসরণ নামবে শূন্যের ঘরে। কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি মানুষ ব্যবহার করবে না। মানুষের চাহিদা মেটাবে কেবল নবায়নযোগ্য জ্বালানি।

ইউনূসের বিশ্বাস, শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য দারিদ্র্য আর শূন্য বেকারত্ব অর্জনের পথ ধরে মানুষ পৌঁছাতে পারে সেই নতুন জীবনধারায়, যা আত্মবিধ্বংসী নয়, বরং নিজেই নিজের আবাসভূমিকে রক্ষা করবে।

সম্মেলনের সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি জলবায়ু বিপর্যয়কে একটু অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করার অনুমতি চাই। এ দৃষ্টিকোণ আমাদের জলবায়ু ধ্বংস মোকাবিলার চেয়ে আরও ধ্বংস রোধের দিকে নিয়ে যাবে। এটি একটি বৃহৎ লক্ষ্য এবং বড় প্রশ্নের জন্ম দেয়।

তিনি বলেন, আমি আপনার সহানুভূতি চাই যে, আমি আপনাদের সঙ্গে আমার বহুদিনের স্বপ্নের কথা শেয়ার করতে পারি, যেখানে একটি নতুন ‘তিন শূন্য’ বিশ্ব গড়ে তোলার কথা রয়েছে।