চসিক মেয়রের শপথ নিলেন ডা. শাহাদাত

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় শপথ অনুষ্ঠান।

শপথ অনুষ্ঠান শেষে জুলাই আন্দোলনে হতাহতদের স্মরণ করে উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, এ শপথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ শপথ অনুষ্ঠিত হলো বিপ্লবোত্তর সময়ে। …এ সরকার রুটিন কেয়ারটেকার সরকার নয়। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র, জনতা, শ্রমিক- তাদের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য আমানত হিসেবে এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা ট্রাস্টি, বেনিফিসিয়ারি হচ্ছে সারাদেশের মানুষ।

শপথ অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকেও অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় আসেন।

শপথগ্রহণ শেষে চসিক মেয়র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন বলে জানা গেছে। ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম ফিরে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন চসিকের নতুন মেয়র।

শপথ গ্রহণ নিয়ে গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দফতরের দায়িত্বরত ইদ্রিস আলী জানিয়েছিলেন , মেয়র হিসেবে ডা. শাহাদাত হোসেন শপথ গ্রহণের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে যাবেন। সেখানে মাজার জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর তিনি মেজবানে অংশ গ্রহণ করবেন। পুরান পল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন জোনাকি কমিউনিটি সেন্টারে এ মেজবানের আয়োজন করা হচ্ছে। ডা. শাহাদাতের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় অবস্থান করছেন। আগামী মঙ্গলবার শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামে ফিরে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

প্রসঙ্গত; ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে রেজাউল করিমসহ নয়জনকে বিবাদী করে মামলা করেন নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।

এর আগে নির্বাচনে কারচুপি প্রমাণ পাওয়ায় গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত তাকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। একইসঙ্গে ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবকে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশ দেন। ৮ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাওয়ার পর করণীয় জানতে চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কারণ ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন সংশোধন করে রেজাউল করিম চৌধুরীসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। একই দিন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।