পুষ্টিবান জাতি গঠনে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের বিকল্প নেই

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিনিয়ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে গর্ভবতী মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে। পুষ্টি সমৃদ্ধ ও আয়োডিনযুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে পারলে প্রত্যেকে সুস্থ থাকবে। শরীর ঠিক রাখতে হলে পরিমাণ মতো পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। পুষ্টিবান জাতি গঠনে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের কোন বিকল্প নেই।

 তিনি বলেন, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণে নিজেদের পাশাপাশি অন্যদেরকেও উৎসাহিত করতে হবে। এ জন্য সর্বত্র জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। মা ও শিশুর সুরক্ষায় নির্ধারিত টিকার পাশাপাশি ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদেরকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি ভ্যাকসিন দিতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদে ডাক্তারের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে পুষ্টি বার্ত পৌঁছায় দিতে হবে। নগরীর ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান কিশোরী-কিশোরী ক্লাবের পুষ্টি কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হবে।

আজ বুধবার দুপুরে নগরীর লালখান বাজার শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত কিশোর-কিশোরী পুষ্টি ক্লাবের সদস্যদের ওরিয়েন্টেশন ও এইচপিভি ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইনের সচেতনতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে ও ইউনিসেফ’র সহযোগিতায় সচেতনতামূলক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়।

সিভিল সার্জন বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় গত ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪। আগামী ২১ নভেম্বর এ ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হবে। শুক্রবার ও সরকারী ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ৫ম-৯ম শ্রেণির ১০-১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী/কিশোরী ও স্কুল বহির্ভূত কমিউনিটির ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে এইচপিভি ভ্যাকসিন দেয়া হবে। কিশোরীদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ব্যয়বহুল এইচপিভি টিকা প্রদান করা হচ্ছে। এ ভ্যাকসিনে কোন ধরণের ঝুঁকি বা বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এইচপিভি ভ্যাকসিনের অপপ্রচার বা গুজব রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

চট্টগ্রাম শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমেন ব্যানার্জীর সভাপতিত্বে ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওরিয়েন্টেশনে রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমওসিএস ডাঃ মোঃ নওশাদ খান। ওরিয়েন্টেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিসেফ’র অ্যাডেলেসেন্ট নিউট্রিশন ফ্যাসিলিটেটর অর্ণি চাকমা। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কিশোরী ক্লাব সমন্বয়ক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মচারীগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

ইউনিসেফ’র অ্যাডেলেসেন্ট নিউট্রিশন ফ্যাসিলিটেটর অর্ণি চাকমা জানান, ইউনিসেফ’র কৈশোরকালীন পুষ্টি কার্যক্রমে অর্ন্তভূক্ত কাজ সমূহের মধ্যে রয়েছে-কিশোর-কিশোরী ক্লাব তৈরী, পুষ্টি শিক্ষা কার্যক্রম, বিএমআই নির্ণয়, সাপ্তাহিক আয়রন ও ফলিক এসিড প্রদান, কৃমিনাশক ওষুধ প্রদান, সকল কার্যক্রমের তথ্য !কৈশোরকালীন পুষ্টি কার্যক্রম সেন্ট্রাল রিপোর্টিং সিস্টেম’-এ আপলোড করা, যারা অপুষ্টিতে ভূগছে তাদেরকে স্কুলের মাধ্যমে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার করা, কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে নিউট্রিশন ইন্টারভেনশন প্রদানের মাধ্যমে সকল ছাত্র-ছাত্রীর স্বস্থ্যের উন্নতি ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা