জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সাতকানিয়ার হাজী বদিয়র রহমান নামে এক বয়োবৃদ্ধ পিতার কোটি কোটি টাকা মূল্যমানের জায়গা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নিজের সন্তান ও স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে।
আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে নগরের জামালখানের একটি রেস্টুরেন্টে নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন প্রতারণার শিকার শারীরিক ভাবে অসুস্থ বৃদ্ধ হাজী বদিয়র রহমান। আত্মসাৎকৃত সেই সম্পদ ফিরে পেতে বর্তমান তত্বাবধায়ক সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানান তিনি । পাশাপাশি তাঁর সন্তান আবু মো. মুছা ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার হারুনুর রশিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বদিয়র রহমানের মেয়ে সাজেদা বেগম, সামশুন নাহার, মোছাম্মৎ মমতাজ বেগম, বড় ছেলে মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও ছোট ছেলে ফৌজুল আজিম।
সংবাদ সম্মেলনে কান্না জড়িত কণ্ঠে বদিউর রহমান জানান, আমার চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। আমি দীঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ। চলাফেরা করতে পারিনা। আমার বাম হাত অচল। এ অবস্থায় আমার দ্বিতীয় ছেলে আবু মো. মুছা, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী স্বৈরশাসকের দোসর এবং জালিয়াত চক্রের লিডার স্থানীয় মেম্বার হারুনের সাথে জড়িত হয়ে তাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে গতবছর ২৬ এপ্রিল থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত জালিয়াতি করে তিনটি হেবা দলিলের মাধমে গ্রামের বাড়িভিটা সহ সাতকানিয়া সদরে প্রায় ৩ একর (প্রায় ২শ ৭৭ শতক) মূল্যবান জমি আত্মসাৎ করে নেয়।
এছাড়া আমার জমি বিক্রির প্রায় ১৮ লাখ নগদ টাকাও সে আত্মসাৎ করে। যার কারণে অন্যান্য সন্তানরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সম্প্রতি ভয়াবহ এই জালিয়াতির ঘটনা অবহিত হই। এবং দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আপনাদের, গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জঘন্য এই জালিয়াতির ঘটনা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করি।
তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে যাতে ইসলামী শরীয়াত মোতাবেক আমার চার ছেলে ও তিন মেয়েকে বন্টন করে দিতে দ্বিতীয় ছেলের আত্মসাৎকৃত সেই সম্পদ ফেরত পেতে বর্তমান তত্বাবধায়ক সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। সেই সাথে দ্বিতীয় ছেলে আবু মো. মুছা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী স্বৈর শাসকের দোসর এবং জালিয়াত চক্রের গ্যাং লিডার কুখ্যাত হারুন মেম্বারের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে বদিয়র রহমানের বড় ছেলে মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও মেয়ে সাজেদা বেগম বলেন, রক্তের ভাই হয়ে এমন জগণ্য কাজ করতে পারবে ভাবতেও পারিনি। এখন মুছাকে নিজের ভাই পরিচয় দিতেও ইচ্ছে করেনা। আমরা আমাদের বাবার আত্মসাৎকৃত সম্পত্তি ফেরত পেতে আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বদিয়র রহমানের ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সদস্যরা একটি মানববন্ধন করেন।
এদিকে অভিযোগকারি বদিয়র রহমানের ছেলে আবু মো. মুছার ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
অপরদিকে সাতকানিয়ার দক্ষিণ মাদার্শা ৭ নং ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হারুনুর রশিদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি পরে ফোন দিবেন বলে ফোন কেটে দেন।