বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এখন ধর্মের সওদাগর বের হয়েছে। সওদাগরের কাজ হচ্ছে একটি ধর্মীয় বিষয়কে সামনে এনে বিবাদ সৃষ্টি করে দেওয়া। এরা পত্রপত্রিকায় এমন এমন বক্তব্য দিল, যেটা সত্যের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। আসল ঘটনার সাথে কোন সম্পর্কই নেই। কিন্তু সে তো বলে দিল তা হয়ে গেল।
তিনি বলেন, এদের কারণে যে একটি জাতি কত বড় বিপদের সম্মুখীন হয়, এ লোকগুলো দ্বিতীয়বার চিন্তা করে না। তারা একটি জাতিকে বিভক্ত করে নেতৃত্ব দিতে চায়। সে লাভবান হতে চায়। সত্য মিথ্যার বালাই নেই।’
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর সিমেন্স হোস্টেল ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটে বৌদ্ধ সম্পদায়ের কঠিন চীবর দান উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমস্যাকে রাজনৈতিক মূলধন করলে গুরুতর হবে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক রকম সমস্যা আছে। আর সেসব সমস্যার সমাধান না দিয়ে যদি উল্টো সমস্যাকে রাজনৈতিক মূলধন বানিয়ে ফেলা হয় তাহলে আর সমাধান হবে না। তাই সমস্যার সমাধান করতে হবে। সেসব সমস্যার নিয়ে কথা বলতে হবে, চেষ্টা করতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং কাজ করতে হবে। দেশটা নতুন বাংলাদেশ হয়েছে। নতুন আকাঙ্ক্ষা জন্মেছে। নতুন যে ভাবনা জন্মেছে সেটাকে সবাই মিলে কাজে লাগাতে হবে।’
সমস্যাকে যদি রাজনৈতিক মূলধন বানান, কিংবা কোনো একটি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য কিংবা বিশেষ নেরেটিভ তৈরি করার জন্য, তাহলে সেটা তো সমাধান তো হবে না। এতে সমস্যা আরও বিপদ বাড়িয়ে দিবে। যাদের মাথা বিক্রি করে সে ধরনের বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে, সেসব লোকগুলো সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর ওই নেতা সে তার চরকা ঘুরিয়ে লাভবান হবে। কিন্তু যে লোকগুলোকে ব্যবহার করছে, যাদের কথা বলে সে নেতা হওয়ার চেষ্টা করছে, যাদের কথা বলে বিভক্তি সৃষ্টি করছে, এ লোকগুলো কিন্তু কষ্টে পড়ে যায়। আর এ লোকদের রক্ষা করা বড় ধরনের কষ্ট হয়। আমরা সেদিকে যেতে পারবো না। ঐক্যবদ্ধ থেকে সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’র কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির যে ৩১ পয়েন্ট সংস্কারের অনুষ্ঠান, এতে কিছু বাকি নেই। ধর্ম, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বিচারসহ সব সমাধান আছে। কেউ যদি সে সমস্যার সমাধান এখন দিতে পারে ভালো। আমরা তো এসব সংস্কারের কথা বলছি। এগুলোর পরে যদি আরো কিছু বাকি থাকে সেগুলো আমরা করবো।’
যারা বাঙ্গালি জাতির জন্য কাজ করবে তাদেরকে নিয়েই বিএনপি কাজ করবে উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্ম, মত সবাই যদি এক জায়গায় আসতে পারি। তাহলে আজ যে জাতি সংকটে পড়েছে এখান থেকে মুক্ত হয়ে আবার স্বাধীন বাংলাদেশে যে জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছে, আমরা সেটাকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করব।’
তবে কোনো ব্যক্তিকে আজীবন ক্ষমতায় রাখার জন্য না, কোনো এক দলকে আজীবন ক্ষমতায় রাখার জন্য না, কোনো এক গোষ্ঠীকে দেশ লুটপাট করার জন্য না। যারা জাতিকে বিবেদ সৃষ্টি করে তার মূলধন আদায় করে তাদের জন্য না। যারাই জাতির জন্য সকলের জন্য কাজ করবে আমরা তাদের নিয়েই কাজ করব।’
বাংলাদেশ ভিক্ষু মহাসভার উপ সংঘরাজ সদ্ধর্মবারিধি প্রিয়দর্শী মহাথের এর সভাপতিত্বে ও প্রিয়রত্ন মহাস্থবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, নগর কমিটির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ ও পাথরঘাটা মহাবোধি বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত লোকানন্দ মহাথেরো।
এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নগরীর মুহুরী পাড়ায় বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেন।