খাগড়াছড়ি দীঘিনালা ঘটনায় রেশ ধরে রাঙামাটিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
স্থানীয়রা জানান, পুরো শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জনমনে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। সকালে দীঘিনালায় হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি বনরুপা বাজারে পৌঁছলে পুরো শহরে গুজব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বনরুপা বাজারে হামলা চালানো হয়। আগুন দেওয়া হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
এর আগে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালির সংঘর্ষের জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে সদরসহ পুরো জেলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতের গোলাগুলি ও বিকেলের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১৫ জন।
এদিকে নাশকতা রোধে খাগড়াছড়ি পৌর শহর ও জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যে কোন ধরনের সহিংসতা রোধে এ ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাতে (আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টা) জেলা শহরের নারানখখাইয়া, স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গভীর রাত পর্যন্ত গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
এর মধ্যে ধনঞ্জয় চাকমা দীঘিনালায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষে মারা যান। অপর দুজনকে আহত অবস্থায় রাতে খাগড়াছড়ি সদর থেকে হাসপাতালে আনা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, আহত হয়েছে ৯ জন। তাদের বেশিরভাগই সদর উপজেলা থেকে রাতে এসেছেন। এর মধ্যে তিনজন মারা যান।
নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে। রিপল বাপ্পি চাকমা আরও জানান, রাতেই চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একজন বাঙালি রয়েছেন। আহত বাকি ৯ পাহাড়িকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব বলে তিনি জানান।
তিনজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।