বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভের দায়ে অভিযুক্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দেওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস।
ক্ষমার বিষয়টিকে আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সহানুভূতিশীলতার অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, এই বিষয়টি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও স্থায়ী ও শক্তিশালী করবে।
জায়েদ আল নাহিয়ানকে লেখা ড. ইউনূস তার চিঠিতে আরও বলেন, ‘তাদের সাজা বাতিল করার ক্ষেত্রে আপনার উদার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে জড়িতদের পরিবার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সবাই এজন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’
তিনি বলেন, ‘আপনার সহানুভূতি এবং সুবিবেচনা আমাদের হৃদয় স্পর্শ করেছে। আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইনের প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিকদের কোনও দেশে যাওয়ার আগে সে দেশের স্থানীয় আইন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিতসহ স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’
আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা চিঠিতে উল্লেখ বলেন, ‘আপনার সদয় সিদ্ধান্তের জন্য আমি আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এই মহান দৃষ্টান্ত আমাদের দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য একসঙ্গে কাজ করার জন্য বর্তমান সরকার উদার বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন।
চিঠিতে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করেন।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছেন।শিগগির তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে জানান তিনি।
পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল আদালতে এর আগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৫৭ বাংলাদেশিকে আজ (মঙ্গলবার) সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ক্ষমা করেছেন। শিগগির তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।