কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্প্রীলওয়ে (জলকপাট) ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এ সময় প্রায় ৯ হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশন করা হবে। যা কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়বে। তবে পানি ছাড়ার কারণে আতঙ্কিত না হতে সবাইকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে কাপ্তাই বাঁধের সবকটি স্প্রীলওয়ে (জলকপাট) খুলে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, শনিবার রাতে জলকপাট খোলার কথা থাকলেও খুলে দেওয়া হয়নি। রাতের বেলা বাঁধ খোলা নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোসহ নানা দিক বিবেচনা করে আজ রবিবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে খুলে দেওয়া হয়েছে। তার মতে, পানি ছাড়ার কারণে জনমনে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, বাঁধের গেট খোলা হলে রাঙ্গুনিয়ার ৭ ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। ইতোমধ্যে ২১৭টি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কাপ্তাই বাঁধের গেট শনিবার রাত ১০টায় খোলার কথা থাকলেও তা খোলা হয়নি। প্রত্যাশিত পানির ফ্লো না থাকায় এবং রাতে বাঁধ খোলা আতঙ্কিত হওয়ায় সম্ভাবনাসহ সব দিক বিবেচনা করে তা খোলা হয়নি।
গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা বা বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছায়। পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর ফলে হ্রদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে নিম্নাঞ্চলের অনেকের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সময়ে যদি এ বাঁধের পানি ছাড়ার ব্যবস্থা করা না হতো, তবে হ্রদসংলগ্ন অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতির সম্মুখীন হতো।
প্রসঙ্গত, কাপ্তাই হ্রদে বাঁধ দেয়া অংশে ১২ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের ১৬টি জলকপাট বা স্প্রীলওয়ে রয়েছে । এগুলো দিয়ে একসঙ্গে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক পানি নির্গমন করতে পারে। ১০৯ এমএসএল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও হ্রদে ১০৮ এমএসএলের অধিক পানি পূর্ণ হলে জলকপাট দিয়ে পানি নির্গমণ করা হয়। বর্তমানে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে ৩২-৩৩ হাজার কিউসেক পানি প্রতি সেকেন্ডে কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে।