টানা ৪ দিনের ভারি বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে ঘন্টায় ঘন্টায় পানি বাড়ছে। ফলে কাপ্তাই বাঁধের পানির লেভেল বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে গত দুইদিন বৃষ্টি না হওয়াতে পানি কমার সম্ভাবনার কথাও জানান তাঁরা।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১ টায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানি আছে ১০৭.৪৩ ফুট এমএসএল (মিন সি লেভেল)।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, কাপ্তাই লেকে ১০৮ ফুট এমএসএল পর্যন্ত বিপদসীমার অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং এই পরিমাপে পৌঁছালে ছাড়া হতে পারে কাপ্তাই লেকের পানি।
এছাড়া কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার বিষয়ে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদের গেইটগুলো খুলে দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া সবসময়ই কাপ্তাই ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌবাহিনীকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়। এরপর তারাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এবারও গেইট খোলার অবস্থা তৈরি হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে লেকে রুলকার্ভ অনুযায়ী প্রয়োজনের চেয়ে পানি বেশি আছে, ফলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। তবে ৫ টি ইউনিট হতে সর্বোচ্চ ২৩০ হতে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর ফলে হ্রদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে হ্রদের নিম্নাঞ্চলের অনেকের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ে যদি কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার ব্যবস্থা করা না হয়, তবে কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
কাপ্তাই হ্রদের নিম্মাঞ্চল এলাকা রাঙামাটির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তাদের অনেক ঘর বাড়ি পর্যন্ত পানি চলে এসেছে। এছাড়া অনেকের ঘরে পানি ডুকেছে। তারা এখন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে। তাই তাদের সবার মাঝে আতংক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে।