চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ

চট্টগ্রাম- ঢাকা, চট্টগ্রাম ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম সিলেটগামী সকল ট্রেন বন্ধ

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফেনী ও কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার ( ২২ আগস্ট) দুপুরের পর থেকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচলরত আন্তনগরসহ সব ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

ফেনীর পাশে চট্টগ্রামের মিরসরাই অংশে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যেকোনো সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস এবং সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ছেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বন্যার কারণে ট্রেনগুলো গন্তব্যে যেতে পারেননি। রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনী থেকে ফাজিলপুর পর্যন্ত রেললাইন পানিতে ডুবে গেছে। অনেক জায়গায় রেলসেতুর ওপর দিয়ে পানি চলাচল করছে। আর বন্যার পানিতে কুমিল্লায় রেললাইন উপড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফেনী স্টেশনে বন্যার পানি জমে রয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, জামালপুর, সিলেট ও চাঁদপুরে প্রতিদিন ১১টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া কক্সবাজার, নাজিরহাট, চাঁদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহে লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করে নিয়মিত।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, বন্যার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। বিশেষ করে ফেনীতে রেললাইন ও রেলসেতুর ওপর দিয়ে পানি চলাচল করছে। একই অবস্থা হয়েছে সিলেটের একটি রেলসেতুতেও। চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেললাইনেও পাহাড় ধস হয়েছে। এ অবস্থায় ট্রেন চালানো খুবই বিপজ্জনক। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং রেলের সম্পদ রক্ষায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গতকাল বুধবার থেকে কুমিল্লা ও ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এসব জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টিও অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময়ে সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এদিকে গতকাল বুধবার সকাল থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ ১৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে কুমিল্লায়। এসময় নোয়াখালীতে ১৫০ মিলিমিটার, সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল দেশে সর্বোচ্চ ৩৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।