বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘাতের সময় চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে একজনের মৃত্যুর অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৭০ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে হতাহতের ঘটনায় এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা দায়ের হলো। এর আগে চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানায় একটি করে মামলা দায়ের হয়।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে নগরীর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সেলিম তার ছেলে মো. ফজলে রাব্বীকে হত্যার অভিযোগ এনে নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সেলিমের বাড়ি ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে। মামলার আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বিকেলে নগরীর চান্দগাঁও থানার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ চলছিল। বাদীর ছেলে ফজলে রাব্বি সেই সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশে নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একদল সন্ত্রাসী সমাবেশে হামলা করে বহদ্দারহাট মোড় থেকে চান্দগাঁও থানার মোড় পর্যন্ত এলাকায় বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করে। আসামিদের ছোঁড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে ফজলে রাব্বী পেটে ও বাম কানে গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে নগরীর ও আর নিজাম রোডে রয়েল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, ‘মো. সেলিম নামে এক ব্যক্তি গত ৪ আগস্ট আন্দোলনে তার ছেলে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে একটি মামলা করেছেন। ওইদিন চান্দগাঁও এলাকায় কারও মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা আগে জানতাম না। এজাহার দেওয়ার পর আমরা মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ লতিফ, আবদুচ ছালাম (এম এ সালাম) ও এস এম আবদুল্লাহ আল মামুন, চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনসহ নগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২৭ জন কাউন্সিলরকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- শৈবাল দাশ সুমন, এসরারুল হক, আব্দুর ছবুর লিটন, মোবারক আলী, মোরশেদুল আলম, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, গিয়াস উদ্দিন, জহরলাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, জিয়াউল হক সুমন, পুলক খাস্তগীর, নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মো.ওয়াসিম, নুরুল আলম মিয়া, আব্দুস সালাম মাসুম, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, আসলাম হোসেন, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, মোরশেদ আলী, এইচ এম সোহেল, জাফরুল হায়দার সবুজ, মো. ইসমাইল, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, জহুরুল আলম জসীম ও আতাউল্লাহ।