চট্টগ্রামে কলেজছাত্র ওয়াসিম আকরামকে হত্যার অভিযোগে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১০৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার দিবাগত রাতে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত কলেজ ছাত্রের মা জোসনা বেগম।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চু, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, শৈবাল দাশ সুমন, আবদুস ছবুর লিটন, এসরারুল হক এসরারুল, মোবারক আলী, হারুন অর রশীদ, মোরশেদুল আলম, নুর মোস্তফা টিনু, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, আশরাফুল আলম, গিয়াস উদ্দিন, জহুরলাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, জিয়াউল হক সুমন, পুলক খাস্তগীর, নুরুল আলম মিয়া, মোহাম্মদ ওয়াসিম, আবদুস সালাম মাসুম, জাকারিয়া দস্তগীর, মো. ফিরোজ।
এছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে নুরুল আজিম রনি, মো. ইসমাইল, মো. দেলোয়ার, এন. এইচ. মিন্টু, মোহন ঘোষ, মো. আলী, ভূবন ঘোষ, আরহাম খান, ইসমাইল উদ্দিন লিটন, দৌলত খান, এনামুল হক মানিক, নুর মোহাম্মদ, মো. সোহেল, নেজাম উদ্দিন, মো. আমজাদ হোসেন, ইরফানুল আলম তুষার, ইব্রাহিম খলিল, জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, নুর নবী সাহেদ, শহীদুল ইসলাম, সাগর দাস, জাহেদ হোসেন, জি. এম. তৌশিফ, সাদ্দাম হোসেন ইভান, দেবাশীষ পাল দেবু, মো. জাবেদ, মহিউদ্দিন, মো. জাফর, মো. আলী (সাহেদ), মহিম আজম, দিদারুল আলম, মো. ইলিয়াছ, মো. আলী, মো. ইসহাক, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, দিদারুল আলম মাসুম, মো. মাসুম, জিহান আলী খান, মহিউদ্দিন শাহ, মুজিবুর রহমান রাসেল, মোহাম্মদ রাশেদসহ আরও ১০৮ জনকে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে কলেজছাত্র ওয়াসিম আকরাম নিহতের ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ১০৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে নিহত ওয়াসিম আকরাম পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুরের বারকোড রেস্টুরেন্টের সামনে ছিল। এ সময় ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ যৌক্তিক আন্দোলনে আসামিদের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে সারাদেশের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রসস্ত্রসহ ব্যাপক হামলা চালায়। সে সময় মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণ ও লাঠিসোঁঠা, হকিস্টিক, কিরিচ এবং মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সমাবেশে আক্রমণ করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে ওয়াসিমের বুকে ও নাভীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গত ১৬ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নগরের মুরাদপুর এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কলেজছাত্র ওয়াসিম আকরাম। তিনি চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং একই কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ওয়াসিম কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শফিউল আলমের ছেলে। তারা দুই ভাই ও তিন বোন।