অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও তার সদস্যরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন। দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন। এ সময় জাতির পক্ষ থেকে প্রত্যেকে নির্ভয়ে আনন্দচিত্তে নিজ নিজ কর্মস্থলে, নিজ নিজ সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন এই নোবেলজয়ী।
ড. ইউনূস বলেন, অরাজকতার বিষপাষ্প এখন যেই ছড়াবে বিজয়ী ছাত্র জনতাসহ সব মুক্ত মানুষের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাকে ব্যর্থ করে দেবে।
তিনি আরও বলেন, নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার দূর হয়ে গেছে। কাল সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রের, সুবিচারের, মানবাধিকারের, নির্ভয়ে মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা দলমত নির্বিশেষ সবাই উপভোগ করবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন চেষ্টায় বিভোর হয়ে যারা অপরাধ সংঘটিত করেছে, তাদেরকে আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা দেশের সকল মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য। সর্বত্র অপরাধের বিচার হবে।
ড. ইউনূস বলেন, যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকি, সবার জন্য মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি আমাদের বিজয় অবশ্যই হবে। আল্লাহ মহান আল্লাহ আমাদের সহায়ক।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রায় ৪০০ অতিথির উপস্থিতিতে শপথ নেন তিনি।
এর আগে, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ১০ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ড. ইউনূস।
এ সময় বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান তিন বাহিনীর প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলসহ অন্যরা।
বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট হয়ে গুলশানের বাসায় ওঠেন ড. ইউনূস। সেখান থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান তিনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এখানেই থাকবেন ড. ইউনূস।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর ৬ আগস্ট বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে দেশের পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।